মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ধানে চিটা দিশাহারা চাষি

তীব্র তাপপ্রবাহে দানা পরিণত হয়েছে চিটায়

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

ধানে চিটা দিশাহারা চাষি

এপ্রিলজুড়ে ছিল তাপপ্রবাহ। এ সময়টাতেই ধানে থোড় হয়ে দানা পরিণত হয়। কিন্তু তীব্র তাপপ্রবাহ থাকায় যে সময় ধানের ক্ষতি বেশি হয়েছে। ধানের দানা পরিণত হয়েছে চিটায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন লালমনিরহাটের ধান চাষিরা। ধারদেনা করে বোরো আবাদ করা কৃষকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে জেলায় বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অর্জন হয়েছে ৮৬ হাজার ৮৪০ হেক্টর। এ থেকে প্রায় ৭ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন ধান ও ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আরিফুর রহমান জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে জেলায় ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহে কিছু ধানে চিটা ধরেছে। ইতোমধ্যে যেসব কৃষকের ৮০ ভাগ ধান পেকেছে সেসব কৃষকের ধান কাটার জন্য বলা হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ জমির ধানে চিটা হয়ে গেছে। এ এলাকার কৃষকরা জানিয়েছেন দানা পুষ্ট হওয়ার সময়ে তাপপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় ধানে চিটা হয়েছে। সারা বছরের জন্য ঘরে তোলা ফসলে চিটা হয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছেন কৃষকরা। কালীগঞ্জের চলবলা ইউনিয়নের দুহুলী গ্রামের কৃষক মদন কুমার জানান, আমি এবার এক বিঘা জমিতে বাউধান চাষ করেছি। এবার প্রথমদিকে আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। ধানের চারা রোপণের পরপরই জমিতে নিয়মিত পরিচর্যা করেছি। গাছ বড় হলে আগাছা পরিষ্কারের পাশাপাশি নিয়মিত সার ও ওষুধ প্রয়োগ করি। ধান পরিপক্ব হলে জমিতে আরও যত্ন বাড়াই। ধান হলদে ভাব হলে শুরু হয় তীব্র খরা। গরমের কারণে জমির ধান ধীরে ধীরে চিটা হতে শুরু করে। তখন বিচলিত হয়ে পড়ি। জমিতে নানা পদক্ষেপ নিয়েও কোনো কাজ হয়নি। যেখানে ১ বিঘা জমিতে ৩০ থেকে ৩৫ মণ ধান পাওয়ার কথা। সেখানে চিটা হয়ে যাওয়ায় পাওয়া যাচ্ছে অর্ধেকের কম ধান। সারা বছর এ ধান দিয়ে আমার সংসার চলে। এ বছর হয়তো চাল কিনে খেতে হবে।

কালীগঞ্জ চলবলা গ্রামের কৃষক মোস্তফা কামাল বলেন, আমার ১০ কাঠা জমির ধানে চিটা লেগেছে। এখন ধান কাটার শ্রমিক সংকট। গরমের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় মাঠে আমরা শ্রমিক পাচ্ছি না। একে তো ধানে চিটা, আবার শ্রমিক সংকট, আমরা খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েছি।

বড়বাড়ি গ্রামের কৃষক নাজমুল ও শফিকুল বলেন, মাঠের অনেক কৃষকের ধানে চিটা লেগেছে। নানা সংকটে দিন যাচ্ছে আমাদের। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, এবার তীব্র গরমের কারণে কালীগঞ্জের চলবলা ইউনিয়নে অনেক কৃষকের ধানে চিটা হয়েছে। যেসব এলাকার কৃষকের ধানে চিটা লেগেছে তাদের আমরা পরামর্শ দিচ্ছি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর