শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

হাসপাতাল সমস্যায় জর্জরিত

♦ ডাক্তারসহ জনবলের অভাব ♦ ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল ♦ অকেজো যন্ত্রপাতি ♦ সেবাবঞ্চিত রোগীরা

রোকনুজ্জামান পারভেজ, শরীয়তপুর

হাসপাতাল সমস্যায় জর্জরিত

শরীয়তপুর সদর আধুনিক হাসপাতাল নানা সমস্যায় জর্জরিত। রয়েছে ডাক্তারসহ জনবলের অভাব। ওষুধস্বল্পতা। রোগীদের জায়গা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। হাসপাতাল ভবনটি পুরনো হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। পলেস্তারা খসে পড়ছে। এখানে সচল রয়েছে একটি অ্যাম্বুলেন্স। হাসপাতাল চত্বরে জমে থাকা ময়লায় ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর সদর আধুনিক হাসপাতাল নাম হলেও এখানে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। ১০০ শয্যার হাসপাতাল নামে থাকলেও ৫০ শয্যার জনবলও নেই। ডাক্তার থাকার কথা ৫২ জন। শূন্যপদ ১৭। পরিচ্ছন্নতা কর্মী, জেনারেটর অপারেটর, আয়া ও বিভিন্ন মঞ্জুরিকৃত পদ ৭৮। এর মধ্যে শূন্য ২১টি। রোগীদের রোগ নির্ণয়ের জন্য এ হাসপাতালে সব ধরনের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে দীর্ঘদিন ধরে অকেজো দুটি আল্ট্রাসনোগ্রাফি, দুটি ইসিজি, মাল্টি প্যারামিটার প্যাশেন্ট মনিটর, পাল্্স অক্সি মিটারসহ বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি। ব্যবহার না করায় এগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ সুযোগে দালালরা অন্তঃসত্ত্বাসহ রোগীদের পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য নিয়ে যাচ্ছে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয়। এতে যে কোনো ধরনের পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য অধিক ব্যয়বহুল বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের। এ হাসপাতালে ছোটখাটো অপারেশন করা হলেও সেখানে রয়েছে দালালদের দৌরাত্ম্য। রোগীদের দেখানো হয় নানান ভয়ভীতি। প্রতিদিন আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসে পাঁচ থেকে ছয় শ রোগী। ভর্তি রোগীকে বেশির ভাগ ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়। স্থানীয় সুজন খান অভিযোগ করে বলেন, ‘চিকিৎসকরা ক্লিনিক ব্যবসায় জড়িত থাকায় এমনটা হচ্ছে। রয়েছে ডাক্তারস্বল্পতা। গুণগত ও মানসম্পন্ন সেবা পেতে রোগীরা ভিড় করছে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।’ স্থানীয়দের অভিযোগ-সরকারি হাসপাতাল গুলোয় রোগ নির্ণয়ে বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও কোনোটিরই সুফল পাচ্ছে না শরীয়তপুরের রোগীরা। দালালদের খপ্পরে পরে পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য তাদের যেতে হচ্ছে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা ক্লিনিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা। দুপুর ১টার পর বেশির ভাগ ডাক্তার প্রাইভেট ক্লিনিকে চলে যান। হাসপাতালের আরএমও ডা. মিতু আক্তার বলেন, ‘সব ডাক্তার উপস্থিত থাকেন। রাউন্ডের সময় তাদের রুমে তালা থাকে। ডাক্তারস্বল্পতা রয়েছে। স্বল্প জনবল দিয়ে হাসপাতাল পরিচালনা করতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে চোখের ডাক্তার নেই। আমরা নিয়মিত ঢাকায় চিঠি দিয়ে যাচ্ছি কিন্তু ডাক্তার পাচ্ছি না। দালালের দৌরাত্ম্য রোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর