শিরোনাম
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বন্ধ ১৫ রেলস্টেশন

♦ ধুঁকছে লাকসাম নোয়াখালী ও চাঁদপুর রেল রুট ♦ দুই রুটে কমেছে সাত জোড়া ট্রেন

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

বন্ধ ১৫ রেলস্টেশন

লাকসাম-নোয়াখালী ও লাকসাম-চাঁদপুর রেল রুট অনেকটা বন্ধের পথে রয়েছে। স্টেশন বন্ধ ও ট্রেন কমে যাওয়ায় রুট দুটির এ অবস্থা হয়েছে, বলছেন সংশ্লিষ্টরা। কুমিল্লা অঞ্চলে গত দেড় দশকে ১৫টি রেলস্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। দুই রুটে কমেছে সাত জোড়া ট্রেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, লাকসাম-নোয়াখালী রেল রুটে এখন নিয়মিত মাত্র এক জোড়া ট্রেন চলে। ট্রেন ও যাত্রী কমায় স্টেশনসংলগ্ন ব্যবসায়ীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার যাত্রীরা। বন্ধ স্টেশনগুলো হলো লাকসাম-নোয়াখালী রেল রুটের দৌলতগঞ্জ, খিলা, বিপুলাসার, বজরা ও মাইজদী। লাকসাম-চট্টগ্রাম রেল রুটের নাওটি। লাকসাম-আখাউড়া রেল রুটের আলীশ্বর, ময়নামতী। লাকসাম-চাঁদপুর রেল রুটের চিতোষী, শাহরাস্তি, উয়ারুক, বলাখাল, মধুরোড, শাহতলী ও মৈশাদী। কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার খিলা রেলস্টেশন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়- স্টেশনটি দেড় দশক ধরে বন্ধ রয়েছে। সেখানে প্ল্যাটফর্মে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মালামাল রেখেছেন। অন্য পাশে জুয়া খেলায় ব্যস্ত লোকজন। কোথাও গরু, ছাগল বাঁধা হচ্ছে। কোথাও ধান শুকানো হচ্ছে। স্টাফ কোয়ার্টার ভেঙে পড়ে আছে। এটা যেন পরিত্যক্ত বাড়ি। প্ল্যাটফরমের দুই পাশে রেলওয়ে থেকে ভাড়া নেওয়া দুটি দোকান রয়েছে। তবে দোকানগুলো ক্রেতাশূন্য। এখানে রেলওয়ের কোনো স্টাফকে পাওয়া যায়নি। দোকানি কামাল হোসেন বলেন, এই স্টেশন অনেক জমজমাট ছিল। ট্রেন কমে গেছে। স্টেশনও বন্ধ। এখানে দুই দিন পর একটি ট্রেন থামে। যাত্রী কমে যাওয়ায় আমরা কষ্টে আছি। রেলওয়ের ভাড়া দিয়ে কোনোরকমে টিকে আছে। প্রতিদিন ট্রেন থামলে আমাদের আয় বাড়বে। পাশের খিলাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, খিলা রেলস্টেশন বন্ধ থাকায় বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। লাকসামের দৌলতগঞ্জ রেলস্টেশনটির অফিস ছাড়া পাশের জায়গা দখল হয়ে গেছে। কোথাও মাছের আড়ত, কোথাও হকার মার্কেট করা হয়েছে। এখানে ক্রসিং লাইনটিও দখল হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বন্ধ স্টেশনের কয়েকটির প্ল্যাটফরমের মধ্যে এখন ধান মাড়াই ও গরু বাঁধা হয়। কোথাও রেললাইনের ওপর বাজার বসছে। কোথাও রেলওয়ের সম্পত্তি দখল হয়ে যাচ্ছে। লাকসাম-চাঁদপুর রেল রুটের দেড় দশকে তিন জোড়া ট্রেন কমেছে। এখন দুই জোড়া ট্রেন চলে। সাগরিকা ও মেঘনা। লাকসাম-নোয়াখালী রেল রুটের অবস্থা বেশি বেহাল। এ রুটে চার জোড়া ট্রেন বন্ধ হয়েছে। এক জোড়া উপকূল ট্রেন চলে। দুই দিন বিরতিতে চলে সমতট এক্সপ্রেস। নোয়াখালী-মাইজদী এলাকার যাত্রী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ট্রেন নিরাপদ বাহন। তিনি স্টেশনগুলো চালু ও ট্রেন বাড়ানোর দাবি জানান। চাঁদপুরের গণমাধ্যমকর্মী মনোয়ার কানন বলেন, লাকসাম-চাঁদপুর একটি গুরুত্বপূর্ণ রেল রুট। স্টেশনগুলো চালু ও সেবার মান বাড়লে যাত্রী সংকট হবে না। রেলওয়ে কুমিল্লার ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন, স্টেশন মাস্টার ও জনবল সংকটে স্টেশনগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। স্টেশন মাস্টার নিয়োগ হলে স্টেশনগুলো আবার চালু হবে। ট্রেন বাড়ানো এবং বন্ধ স্টেশন চালুর বিষয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, এসব সিদ্ধান্ত রেল ভবন নেয়। আমরা শুধু বাস্তবায়ন করি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর