শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

পদ্মায় ধু-ধু বালুচর

♦ অস্তিত্ব বিলীনের পথে মহানন্দা, পাগলা পুনর্ভবার ♦ নদীতে নৌকা চলে না হয় চাষাবাদ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

পদ্মায় ধু-ধু বালুচর

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মায় এখন ধু-ধু বালুচর -বাংলাদেশ প্রতিদিন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক সময়ের আগ্রাসী ও প্রমত্তা পদ্মা নদীর অনেক স্থানে এখন ধু-ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে প্রকৃতিতে। এখন পদ্মা নদীতে জেলেদের পরিবর্তে দেখা যায় বালু খেকোদের। তারা দিনরাত অবৈধ পন্থায় পদ্মা তীরবর্তী এলাকা থেকে ভেকু মেশিন বসিয়ে কেটে নিয়ে যাচ্ছে বালু। নৌ যোগাযোগ আর নেই। হারিয়ে গেছে অর্ধশতর বেশি প্রজাতির মাছ। জেলার অন্য তিনটি নদী পাগলা, মহানন্দা ও পুণর্ভবার অস্তিত্ব বিলীনের পথে। এসব নদীর বুকে চলছে ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ।  সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে উত্তরাঞ্চলের লাইফ লাইন পদ্মা নদীতে কোথাও কোথাও হাঁটু পানি। উৎস ও উজান থেকে পদ্মায় পর্যাপ্ত পানি না আসায় নদীর এ অবস্থা হয়েছে। ক্রমশ বালু চরে পরিণত হচ্ছে। চারদিক থেকে ধেয়ে আসছে মরুময়তা। ইলিশের পদ্মায় এখন বালুর রাজত্ব। এ নদীতে পানি না থাকার প্রভাব পড়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অন্য নদীগুলোর ওপর। স্থানীয়রা বলছেন, নদী অববাহিকার লাখো মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে পদ্মায় স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনার বিকল্প নেই।  জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমে মাস তিনেকের জন্য পানি থাকে। বছরের ৯ মাস তলানিতে থাকছে পদ্মা নদীর পানি। এ নদীতে এখন ঘোলাপানি আর স্বচ্ছ পানির মায়াবি দৃশ্য আর নেই। এক সময়ের প্রমত্ত পদ্মা নদী এখন স্রোতহীন। নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে বালুচরের সৃষ্টি হয়েছে। পানিশূন্য পদ্মায় আটকে যাচ্ছে পাথরবাহী জাহাজ। কোথাও আবার মাঝ নদীতে গোসল করে শিশুরা। পদ্মা মরে যাওয়ার সঙ্গে মহানন্দার অস্তিত্বও প্রায় বিলীন। পাগলা নদীর আগের পাগলামিও নেই। পুণর্ভবা নদীরও একই চিত্র। এসব নদীতে বর্ষার সময় কিছু পানি থাকলেও সারা বছর থাকে শুকনো। ফলে এখন নদীর বুকে নৌকা চলে না, হয় চাষাবাদ। উত্তরাঞ্চলের অন্য নদ-নদী অস্তিত্ব হারানোর পথে। এবারও পদ্মায় মাস তিনেকের জন্য যৌবন এসেছিল বর্ষা মৌসুমে। কিন্তু বৈশাখ মাসেই নদীর পানি তলানিতে। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে প্রকৃতিতে। হারিয়ে গেছে অর্ধশত বেশি প্রজাতির মাছ। নৌ যোগাযোগও আর নেই। নদীর বুকে আবাদ হয় ধানসহ বিভিন্ন ফসলের। নদীর এ করুণ দশা প্রসঙ্গে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর বলেন, উৎস থেকে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক না থাকায় নদীর গতিপথ বদলে গেছে। আর দীর্ঘদিন নদীতে ড্রেজিং না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে দুই কূল উপচে পড়ে, আবার শুষ্ক মৌসুমে এসব নদীতে পানি থাকে না।

সর্বশেষ খবর