শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

সংরক্ষণাগার নেই ক্ষতিগ্রস্ত ভুট্টা চাষি

ভালো দাম পান না চাষিরা লাভ যায় মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে, এক যুগে চাষাবাদ বেড়েছে কয়েক শ গুণ

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

সংরক্ষণাগার নেই ক্ষতিগ্রস্ত ভুট্টা চাষি

উত্তরের নদীবিধৌত জেলা লালমনিরহাট। তিস্তা-ধরলাসহ ১৩ নদী বয়ে গেছে এ জেলার ওপর দিয়ে। নদীগুলোয় পানি নেই। জেগে উঠেছে শতাধিক চর। এসব চরে চাষাবাদও হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হচ্ছে ভুট্টা। তবে এখানে এখনো গড়ে ওঠেনি ভুট্টা প্রসেসিং কেন্দ্র ও সংরক্ষণাগার। এতে ভুট্টার ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এক যুগে এ জেলায় ভুট্টা চাষ বেড়েছে কয়েক শ গুণ। আগামীতে এ ফসলের চাষ আরও বাড়তে পারে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খরচ কম লাভ বেশি হওয়ায় লালমনিরহাটে ক্রমেই বাড়ছে ভুট্টা চাষ। প্রাপ্ত তথ্যমতে, জেলায় ১৯৮৬-৮৭ অর্থবছরে ৪০ একর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়। এর পর থেকে ধীরে ধীরে পাটগ্রাম-হাতীবান্ধা অঞ্চলে ভুট্টা চাষ বাড়তে থাকে। বর্তমানে জেলার ব্র্যান্ডিং নাম ‘ভুট্টায় ভরা সবার ঘর, লালমনিরহাট স্বনির্ভর’। তবে এখনো গড়ে ওঠেনি ভুট্টা প্রসেসিং কেন্দ্র ও সংরক্ষণাগার। এতে ভুট্টার ফলন ভালো হলেও ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ক্ষতির শিকার হতে হয় চাষিদের।

চাষিরা বলছেন, জেলাজুড়ে যেদিকে চোখ যায় সেদিকই নজর কাড়ে সোনালি ভুট্টা। ভুট্টাই পাল্টে দিয়েছে লালমনিরহাটের কৃষকের জীবনমান। অসংখ্য কৃষক ভুট্টা চাষ করে জীবনের গতি ফিরিয়েছেন। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সমতল ও চরাঞ্চলে উৎসাহ নিয়ে লাখো কৃষক ৩৬ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করেছে। জেলার হাতিবান্ধার ভুট্টা চাষি রিফাত মিয়া বলেন, ‘পাঁচ বছর ধরে ভুট্টা চাষ করছি। এ ফসল চাষে কম খরচে বেশি লাভ হয়। লালমনিরহাটে ভুট্টা প্রসেসিং কেন্দ্র ও সংরক্ষণাগার নেই। খেত থেকে ভুট্টা তুলেই স্বল্প লাভে বিক্রি করতে হয়। এতে মধ্যস্বত্বভোগীরা কৃষকের চেয়ে বেশি লাভবান হয়।’ আদিতমারী উপজেলার ভুট্টা চাষি আজিজার রহমান বলেন, ‘ভুট্টা চাষ করে কৃষক লাভবান হচ্ছে। তবে যে লাভ কৃষকের হওয়ার কথা তা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে ভুট্টানির্ভর শিল্পকারখানা না থাকায়।’ একই এলাকার আকবর হোসেন বলেন, ‘ভুট্টা সংরক্ষণ করে দেরিতে অধিক মূল্যে বিক্রি করার সুযোগ নেই এখানে। ভুট্টানির্ভর কারখানা বা ভুট্টা সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে কৃষক অধিক লাভবান হতো।’ কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. শাহ্ আলম বলেন, ‘জেলার জমি ভুট্টা চাষ উপযোগী হওয়ায় ফলন বেশি হচ্ছে। এতে কৃষক লাভবান হচ্ছে। এ বছর ইতোমধ্যে ৭০% ভুট্টা কাটা হয়েছে। এ জেলায় ভুট্টা সংরক্ষণাগার নেই। আমরা ভ্ট্টুা প্রসেসিং কেন্দ্র ও সংরক্ষণাগার স্থাপনের চেষ্টা করছি।’

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, ‘লালমনিরহাটে একটি ভুট্টা প্রসেসিং কেন্দ্রের প্রয়োজন। আমরা একটি প্রস্তাব রেখেছি। যাতে কৃষক ভুট্টাগুলো যথানিয়মে প্রসেস করতে পারে। স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী ভুট্টানির্ভর শিল্পকারখানা গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। প্রয়োজনে তাদের বিসিকে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর