শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বর্জ্যে বিষাক্ত নদী-খালের পানি

♦ বেড়েছে শহরের বিস্তৃতি কমেছে নদী খালের পরিধি ♦ সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে যায় শহরের কোনো কোনো এলাকা

শেরপুর প্রতিনিধি

বর্জ্যে বিষাক্ত নদী-খালের পানি

এক সময়ে শেরপুর শহরের মধ্য দিয়ে প্রসিদ্ধ ও প্রশস্ত টলমলে পানির খাল ছিল। এ খালের নামানুসারে এর নামকরণ হয় খালপাড়। শহরের খড়মপুর থেকে পৌর কবরস্থান হয়ে মধ্য শেরীপাড়া দিয়ে কসবা অতিক্রম করে হাঁড়ির মুখ হয়ে মৃগী নদীতে মিশেছে খালটি। সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘের খালটি মুক্ত বায়ু সেবন ও সাধু পানির মাছ ধরার আকর্ষণীয় স্থান ছিল। মানুষ এখানে গোসলও করত। সকাল-সন্ধ্যায় পাখির কলরবে মুখর থাকত খালপাড়। বছর চল্লিশ আগে সরকার খালটি সংস্কার করেছিল। কালের বিবর্তনে দখল-দূষণে খালটি এখন মৃতপ্রায়। এখন এ খাল ময়লা-আবর্জনার বড় ভাগাড়। চল্লিশ বছরে খালটির দিকে কেউ চেয়েও দেখেনি। এক সময়ের প্রসিদ্ধ এ খাল এখন অস্তিত্ব হারানোর পথে। খালপাড় আছে কিন্তু খাল কই এমন প্রশ্ন এখন এলাকাবাসীর।

স্থানীয়রা জানায়, মৃগী নদীর ছোট্ট ডানা ছিল এ খাল। শত বছর আগে শহরের পানি নিষ্কাশন ও খরায় খালপাড়ের কৃষি জমিতে পানি সরবরাহের জন্য খালটি প্রশস্ত ও গভীর করে খনন করেন তৎকালীন জমিদাররা। বৃষ্টি হলে শহরের সড়ক অলিগলিতে জমা পানি ওই খাল দিয়ে নেমে যেত মৃগী নদীতে। তবে শহুরের বিস্তৃতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিধি কমেছে খালের। আর এখন শহরের বর্জ্যে খাল ভরে গিয়ে বিষাক্ত হয়ে পড়েছে খালের পানি। দুর্গন্ধে খালের পাড় দিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। আর বর্ষায় পানির চাপ বাড়লে বিষাক্ত বর্জ্যসহ পানির স্রোত মৃগী নদীতে গিয়ে পড়ে। ফলে মৃগী নদীও দূষণের কবলে পড়ে। এখানে এখন মাছের কোনো অস্তিত্ব নেই। মাছ বেঁচে থাকার ব্যবস্থাও নেই। বিজ্ঞজনেরা বলছেন, শহরের পানি বের করতে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে পাকা ড্রেন করছে। তবুও সামান্য বৃষ্টিতে শহরের কোনো কোনো এলাকা ডুবে যাচ্ছে। এর বড় কারণ হলো খালগুলো সংস্কার না করা। সংস্কার করলে মরা খালটিও বেঁচে যেত। শেরপুর পৌর মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন বলেন, বিষয়টি পরিবেশ ও জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট। খালটি খনন ও পরিষ্কার এবং দুই পাড় পাকা করে দেওয়া হবে। মানুষ এখানে নির্মল নিরিবিলি পরিবেশে সকাল-সন্ধ্যায় হাঁটতে ও মুক্ত বায়ু সেবন করতে পারবে। পৌরসভা এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর