মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিলে ড্রেজার, সর্বনাশ কৃষকের

► গভীর গর্ত হওয়া ওইসব জমির পাশের বিশাল এলাকা ধসে যাওয়ার আশঙ্কা ► হুমকির মুখে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি

ফরিদপুর প্রতিনিধি

বিলে ড্রেজার, সর্বনাশ কৃষকের

চাপাদহ বিলে বালু তুলতে বসানো ড্রেজার -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের চাপাদহ বিল ও সংলগ্ন এলাকায় অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। সেখানে লিজ নেওয়া জমির পাশাপাশি অন্যান্য ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকেও বালু তোলা হচ্ছে। বালু তোলায় গভীর গর্ত হওয়া ওইসব জমির পাশের বিশাল এলাকা ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। বিলের পাশ দিয়ে যাওয়া রেল লাইনটিও হুমকির মুখে পড়তে পারে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চাপাদহ বিল ও সংলগ্ন এলাকায় প্রভাবশালীরা শুধু লিজ নেওয়া স্থান থেকেই নয়, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে ড্রেজার বসিয়েও বালু তুলছে। চাপাদহ বিল মৎস্য সমিতির কয়েক নেতার যোগসাজশে স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব কর্মকান্ড চলছে। বালু এসব জায়গা থেকে তোলার কারণে কয়েক হাজার একর জমির ধান, পাটসহ ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়ছে। অভিযোগে জানা গেছে, সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা ৭৬ দশমিক ১০ একর জমি লিজ নিয়ে চাপাদহ বিলে মাছ চাষ শুরু করে মৎস্যজীবী সমিতির নামে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। আর শুকনো মৌসুমে ওই বিল খননের নামে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। শুধু বিলেই নয়, ড্রেজার বসানো হয়েছে কয়েক ব্যক্তির মালিকানাধীন জমিতেও। আর তা নিয়েই এলাকাবাসীর মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক ক্ষোভের। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারের কাছে কোনো অনুমতি না নিয়েই অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে লাভবান হওয়ার জন্য বালু উত্তোলন ও তা বিক্রির পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে। এ বিলে জমি রয়েছে তাদের মধ্যে বিশ্বজিৎ, দিনেশ সরকার, মিহির বিশ্বাস, আফসার মোল্লা, সাগর মোল্লা, বায়জিদ অভিযোগ করে বলেন, ব্যক্তি মালিকানার জায়গায় ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ নিয়ে বাধা দিলে তাদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া বালু উত্তোলনের ফলে বিশাল এলাকা নিয়ে ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তারা জানান, বিলে শত শত ব্যক্তির মালিকানা জমি রয়েছে। ওই প্রভাবশালীরা প্রায় ৭৭ একর জমি সরকারের কাছ থেকে বিলের নামে লিজ নিলেও বর্ষা মৌসুমে প্রায় ২ হাজার একর জমিতে মাছ চাষ করে থাকে। যারা জমির মালিক রয়েছে তাদের কোন কিছুই দেওয়া হয় না। চাপাদহ বিল মৎস্য সমিতির নামে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এটি নিয়ন্ত্রণ করেন। এর সঙ্গে প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তি, সাবেক, বর্তমান কয়েক চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিকসহ প্রভাবশালীরা জড়িত রয়েছেন। ভুক্তভোগীরা ব্যক্তি মালিকানা জমি বুঝিয়ে দেওয়াসহ বিল থেকে যাতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন না করা হয় পাশাপাশি ফসলি জমি, রেলসড়ক রক্ষার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন। মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আশুতোষ বিশ্বাস বলেন, আমরা অনুমতি নিয়েই ড্রেজার বসিয়েছি এবং কারা জমিতে ড্রেজার বসাইনি। বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বিল থেকে তিন ফুট মাটি খনন করা হবে। এতে কৃষকের কোনো ক্ষতি হবে না। আর যারা অভিযোগ করেছেন তারা ঠিক বলেননি। অনেকেই বিলের জায়গা দখল করে রেখেছেন। আমরা সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করব।

সর্বশেষ খবর