বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

২৫০ শয্যায় চিকিৎসক মাত্র ১৫

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ‘শয্যার বিপরীতে তিন-চার গুণ বেশি রোগী সব সময় ভর্তি থাকছেন’

জামান আখতার, চুয়াডাঙ্গা

২৫০ শয্যায় চিকিৎসক মাত্র ১৫

চিকিৎসক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম। এ ছাড়া হাসপাতাল ভবনের আশপাশের নোংরা আবর্জনার স্তূপ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বেড়েছে মশা-মাছির উৎপাত। এ কারণে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে হাসপাতালে। ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ১৫ জন। ছয় বছর আগে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও বাড়তি শয্যার ওষুধ, খাদ্য ও জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামাল দিতে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে ৫০ শয্যার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ১০০ শয্যায় উন্নীত হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন অনুমোদনহীন থাকে ১০০ শয্যার জনবল। এ অবস্থায় ২০১৮ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এ হাসপাতালকে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল ঘোষণা করেন। তবে এরপরও মেলেনি বাড়তি জনবলের অনুমোদন।

হাসপাতাল সূত্র আরও জানায়, ৫০ শয্যার হাসপাতাল অনুযায়ীই চিকিৎসক থাকার কথা ২২ জন। অথচ ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে চিকিৎসক কর্মরত আছেন মাত্র ১৫ জন। ৫০ শয্যার হাসপাতালের জনবল কাঠামো অনুযায়ী এ হাসপাতালে সাতটি পদ শূন্য রয়েছে। এ অবস্থায় জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অর্থোপেডিক ও সার্জারি), মেডিকেল অফিসারের তিনটি পদ, ডেন্টাল সার্জন, মেডিকেল অফিসার হোমিও এবং আয়ুর্বেদিক পদে অন্য হাসপাতালের চিকিৎসক সংযুক্ত করা হয়েছে। হাসপাতালে পদ শূন্য রয়েছে সিনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি), সিনিয়র কনসালট্যান্ট চক্ষু, সিনিয়র কনসালট্যান্ট অ্যানেসথেসিয়া, সিনিয়র কনসালট্যান্ট শিশু, মেডিসিন ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট ইএনটি, রেডিওলজি এবং মেডিকেল অফিসারের। সরেজমিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গেলে ভবনের আশপাশে আবর্জনার স্তূপ চোখে পড়ে। দু-এক জায়গায় দুর্গন্ধযুক্ত পচা আবর্জনাও পড়ে থাকতে দেখা যায়। এতে হাসপাতাল এলাকায় মশা-মাছির উপদ্রুপ বৃদ্ধি পেয়েছে। রোগীর স্বজন আমেনা বেগম বলেন, এমনিতেই রাতে ঘুমাতে কষ্ট হয়। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে মশার উপদ্রুপ। কয়েল জ¦ালিয়েও কাজ হয় না। কয়েলে মশা না গেলেও রোগী ও সঙ্গে থাকা লোকজনের স্বাস্থ্যহানি ঠিকই হচ্ছে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. উম্মে ফারহানা বলেন, ২০১৮ সালে ২৫০ শয্যা হাসপাতালের উদ্বোধন হলেও আজ পর্যন্ত তার অনুমতি মেলেনি। ২০১৩ সালে ১০০ শয্যার হাসপাতাল অনুমোদন হলেও আজ পর্যন্ত সে মোতাবেক জনবল বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ৫০ শয্যার জনবলের  চেয়েও কম জনবল দিয়ে হাসপাতালটি চলছে। বর্তমানে এখানে শয্যার বিপরীতে তিন-চার গুণ বেশি রোগী সব সময় ভর্তি থাকছেন। হাসপাতাল চত্বরে ময়লা আবর্জনার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা নিয়মিতই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে অনেকটা বেগ পেতে হয়। তাছাড়া অনেক রোগীর স্বজনের অসচেতনতার কারণেও নোংরা-আবর্জনা জমা হতে পারে।

সর্বশেষ খবর