শনিবার, ৮ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাঁধ ভেঙে ডুবছে ঘরবাড়ি

দুর্ভোগে হাজারো পরিবার ভেসে গেছে চিংড়ি ঘের পুকুরের মাছ ঘর তলিয়ে বন্ধ রান্না

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাঁধ ভেঙে ডুবছে ঘরবাড়ি

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় রিমালে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে গ্রামপ্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে পাঁচটি গ্রামের ১ হাজারের বেশি পরিবারের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। দুই সপ্তাহ ধরে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে এসব পরিবার। একমাত্র আয়ের উৎস চিংড়ি ঘের, পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ায় সর্বস্বান্ত উপজেলার পেড়িখালী ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের মানুষ। পেড়িখালীর ইউপি সদস্য ফকির গিয়াস উদ্দিন, মো. নজরুল ইসলাম জানান, সিংগড়বুনিয়া, রোমজাইপুর, সাতপুকুরিয়া, আড়ুয়াডাঙ্গা, জিগিরমোল্লা গ্রামের চারদিক দিয়ে বয়ে গেছে মোংলা-ঘসিয়াখালী নৌ চ্যানেল ও মাদারতলা নদী। এর মধ্যেই এ পাঁচ গ্রামের মানুষের বসবাস। প্রতিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতবিক্ষত হয় এলাকাটি। ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে প্রতিরক্ষাবাঁধ ভেঙে পাঁচ গ্রামের মানুষের ঘরবাড়ি তলিয়ে যায়। একমাত্র আয়ের উৎস হাজার হাজার হেক্টর চিংড়ি ঘের, পুকুরের মাছ ভেসে যায়। ১ হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি দুই সপ্তাহ ধরে দিনে দুবার জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হচ্ছে। সিংগড়বুনিয়া ও সাতপুকুরিয়া গ্রামের গৃহবধূ রহিমা বেগম ও তাসলিমা খাতুন জানান, ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রান্না করাও যাচ্ছে না। শুকনা খাবারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। লবণপানি প্রবেশ করায় নিয়মিত গোসল করাও বন্ধ হয়ে গেছে। দূরের গ্রামে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে গিয়ে খাবার পানি আনাসহ গোসলও করতে হচ্ছে। রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় ছেলেমেয়েরা স্কুলেও যেতে পারছে না। রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রহিমা সুলতানা বুশরা বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসে রামপালে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতে সরকারের পক্ষ থেকে ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশা করি কয়েক দিনের মধ্যে বাঁধ মেরামত শেষ হলে হাজারো পরিবারের দুর্ভোগ লাঘব হবে।

জেলা প্রশাসক মুহা. খালিদ হোসেন জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বাঁধ মেরামত কার্যক্রম মনিটরিং করতে বলা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহম্মদ আল বেরুনী বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতার বাইরে থাকা রামপালের এ পাঁচ গ্রামসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে চরম ঝুঁকির মধ্যে থাকা অন্য এলাকাগুলোয় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে এসব এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর