রবিবার, ৯ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

যমুনায় তীব্র ভাঙন

♦ ১০ দিনে বিলীন ২ শতাধিক বসতভিটা ফসলি জমি ♦ ভাঙন ঝুঁকিতে হাজারো বিঘা জমি, স্থাপনা, মসজিদ, হাটবাজার

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

যমুনায় তীব্র ভাঙন

যমুনা নদীতে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে পানি বাড়ছে দ্রুতগতিতে। গত ১০ দিনে জেলার শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুরের গুচ্ছগ্রাম ও পাঁচিল এলাকার ২ শতাধিক বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি, স্থাপনা, মসজিদসহ হাটবাজার। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে তীরবর্তী বাসিন্দাদের। অনেকে ঘরবাড়ি ভেঙে স্তূপ করে রেখে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। ভাঙনকবলিতদের অভিযোগ, সরকার ভাঙন রোধে তীর সংরক্ষণে বরাদ্দ দিলেও সঠিক সময়ে কাজ না করায় তাদের বাস্তুভিটা হারাতে হচ্ছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানান, ২ জুন থেকে যমুনার পানি দ্রুতগতিতে বাড়ছে। শুক্রবার সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৭৪ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২ দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর পানি বাড়ার সঙ্গে যমুনার অরক্ষিত অঞ্চল শাহজাদপুরের কৈজুরী, খুকনী ও জালালপুরে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনকবলিত গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা আবদুল মান্নান, হারুন মিস্ত্রি, আবু সাইদ, শাহাদত সরকার ও পাচান আলী জানান, ১৫ বছর ধরে জালালপুর, খুকনী ও কৈজুরী ইউনিয়নে যমুনার ভাঙন চলছে। একেকজনের বসতবাড়ি ১০-১১ বার ভাঙনের কবলে পড়েছে। ফসলি জমিসহ সবকিছু হারিয়ে তারা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেছ। তারা বলছেন, এ অঞ্চলের ৮-১০টি গ্রামের হাজার হাজার পরিবারের বাড়িঘর, কয়েক শ বিঘা ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, তাঁতশিল্প, রাস্তাঘাটসহ বহু স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বহু মানুষ বাস্তুহারা ও নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। ভাঙনকবলিতরা অভিযোগ করছেন, দীর্ঘ আন্দোলনের পর সরকার এ অঞ্চলে ভাঙন রোধে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেয়। প্রকল্পটির কাজ শুরু হলেও ঠিকাদার ও পাউবোর গাফিলতিতে কাজ চলছে কচ্ছপগতিতে। এ কারণে এসব অঞ্চলকে ফের ভাঙনের কবলে পড়তে হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘পানি বাড়ায় শাহজাদপুরের কৈজুরীর গুচ্ছগ্রাম, পাঁচিল ও হাটপাঁচিলে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এ উপজেলায় যমুনার ডান তীর সংরক্ষণে সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ৬৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণকাজ চলছে। প্রকল্পের আওতায় নদী ড্রেজিং করে প্রশস্ত করা হচ্ছে। সিসি ব্লক ম্যানুফ্যাকচারিং প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মানুফ্যাকচারিং শেষ হলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ শুরু হবে। এ কাজের মেয়াদ ছিল চলতি বছরের জুন পর্যন্ত। কাজ শেষ না হওয়ায় আরও এক বছর মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হবে। আশা করি আগামী বছর স্থায়ী বাঁধের নির্মাণকাজ শেষে আর ভাঙন দেখা দেবে না।’

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর