সোমবার, ১০ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

৮০ আলামত জব্দ, নিষ্ক্রিয় ছয় বোমা

নেত্রকোনায় জঙ্গি প্রশিক্ষণ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

৮০ আলামত জব্দ, নিষ্ক্রিয় ছয় বোমা

নেত্রকোনা জেলা সদরের একটি গ্রামে এক প্রকৌশলীর বাড়ির আঙ্গিনা থেকে জঙ্গি প্রশিক্ষণের ৮০টি আলামত জব্দ করেছে পুলিশ। টানা ৩০ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর এ অভিযানে অসংখ্য বিস্ফোরক দ্রব্য, বিদেশি পিস্তল ও ১৭ রাউন্ড গুলিসহ জঙ্গি প্রশিক্ষণের এসব আলামত উদ্ধার করা হয়। এ সময় ছয়টি ইমপ্রোভাইড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করে এন্টি টেরোরিজম টিম। শনিবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া এ অভিযান শেষ হয় গতকাল সন্ধ্যায়। পুলিশ জানায়, গত ছয় জুন অস্ত্র মামলার আসামি মো. হামিম হোসেন ফাহিম ওরফে আরিফ (৩২) নামের এক যুবক নরসিংদীতে গ্রেফতার হয়। আরিফ পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ থানার মাঝিবাড়ি এলাকার সেলিম মিয়ার পুত্র। ভাড়া থাকতেন নেত্রকোনার দেওপুর ভাসাপাড়ায়। এ তথ্যের ভিত্তিতে নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি আবুল কালাম পিপিএম খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন স্থানীয় কাইলাটি ইউনিয়নের ভাসাপাড়া গ্রামের ওই বাড়িটি ঢাকা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (ডুয়েট) এর সাবেক প্রফেসর প্রকৌশলী মো. আবদুল মান্নানের। পরে ওই বাড়িতে তল্লাশিকালে একটি বিদেশি পিস্তল ও ১৭ রাউন্ড গুলিসহ বেশ কিছু আলামত পায় পুলিশ। এরপর নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর ওই বাড়ি ঘেরাও করে রাখা হয়। প্রায় সাড়ে তিন একর জায়গাজুড়ে বাড়িটি সন্দেহজনক হওয়ায় এন্টি টেররিজম ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়। এন্টি টেররিজম ময়মনসিংহের অতিরিক্ত ডিআইজি আসাদুল্লাহ চৌধুরী একটি টিম নিয়ে পরিদর্শন করে জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পান। এরপর শনিবার দুপুর থেকে চলা অভিযানে গতকাল সকালে যোগ দেন ঢাকা থেকে আসা এন্টি টেররিজম টিম। পুলিশ সুপার সানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে সোয়াট, বোম ডিস্পোজাল টিমসহ তিনটি টিম টানা অভিযান শুরু করে হাতে তৈরি বোমা উদ্ধারসহ ৮০ ধরনের জঙ্গি প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত আলামত জব্দ করে। বিকাল সাড়ে পাঁচটার সময় ৬টি বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করে আইইডি। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেন। পরে তিনি প্রেস ব্রিফিং করে বলেন, এখানে উন্নতমানের জিমনেশিয়াম পাওয়া গেছে। যা সচরাচর কোন জিমেও ব্যবহার হয়না। এছাড়াও অনেকগুলো বাথরুমসহ ভেতরে ফিশারির জায়গা পরিদর্শন করে ধারণা করা হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ জনের মতো প্রশিক্ষণ নিতে পারে। ঘরে রান্না করা খাবারের পরিমাণ দেখে ধারণা করা হচ্ছে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে খাবার না খেয়েই অনেকে পালিয়ে গেছে। তাদের কাছে উন্নতমানের দুটি দুরবিন ছিল। এ ছাড়াও সিসি টিভি ক্যামেরা দ্বারা বাড়িটি নিয়ন্ত্রণ করা হতো।

সর্বশেষ খবর