সোমবার, ১০ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

লিবিয়ায় অপহৃত নাটোরের চার যুবক উদ্ধার

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের গুরুদাসপুরের লিবিয়া প্রবাসী চার যুবককে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত করেছে ওই দেশের আইনশৃঙ্গলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এর আগে অমানুষিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে তাদের পরিবারের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। লিবিয়ায় শ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন কাজে কর্মরত ছিলেন তারা। গত সাত দিন ধরে মুক্তিপণের দাবিতে জিম্মি যুবকদের পরিবারের কাছে শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠাচ্ছিল অপহরণকারীরা। সবাই মুক্ত হওয়ায় এখন অপহৃতদের পরিবার ও গ্রামে চলছে আনন্দের বন্যা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় লিবিয়া প্রবাসী সোহান মুক্ত হয়ে পরিবারের কাছে সেই ভিডিও বার্তা পৌঁছে দেন। সোহানসহ নাটোরের গুরুদাসপুরের বিয়াঘাট চরপাড়া গ্রামের নাজিম, সাগর ও বিদ্যুৎকেও নির্যাতন করে সেই ভিডিও তাদের পরিবারের সদস্যদের পাঠিয়ে জনপ্রতি ১০ লাখ টাকা করে ৪০ লাখ টাকা দাবি করেছিল অপহরণকারীরা।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় লিবিয়ার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা চারজনকে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত করে তাদের হেফাজতে নেন। সেই সঙ্গে আটক করেন দুই বাংলাদেশি ও দুই লিবিয়ানসহ চার অপহরণকারীকে। চার যুবক মুক্ত হওয়ার সংবাদে নাটোরের বসবাসরত তাদের স্বজনদের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা।

গুরুদাসপুর থানার ওসি উজ্জ্বল হোসেন জানান, ‘ঘটনার পর থেকেই তিনি এ বিষয়ে তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছিলেন। নাটোর পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলামের নির্দেশে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে থানা পুলিশ সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছে।’

প্রায় দুই বছর আগে বিয়াঘাট চরপাড়া গ্রামের মো. শাজাহান প্রামাণিকের ছেলে মো. সোহান প্রাং (২০), মো. তয়জাল শেখের ছেলে মো. সাগর হোসেন (২৪), ও ইনামুল ইসলামের ছেলে মো. বিদ্যুৎ হোসেন (২৬) লিবিয়ায় কাজের জন্য যান। আর মৃত শুকুর আলীর ছেলে নাজিম আলী (৩২) লিবিয়ায় যান দুই মাস আগে। সবার পরিবার থেকেই জমি বন্ধক, গরু বিক্রি ও ঋণ করে সন্তানদের বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে উপার্জিত প্রায় ২ লাখ করে টাকা প্রতি মাসে ১৫-২০ হাজার করে তারা পাঠিয়েছেন। অভাবের সংসারেও হতদরিদ্র পরিবারগুলো প্রবাসী সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে ছিল। প্রবাস থেকে উপার্জিত টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করে সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন ভেবেই ঋণ করে ছেলেদের বিদেশে পাঠিয়েছিলেন।

গত ২ জুন লিবিয়া থেকে ওই চার প্রবাসীর পরিবারের ‘ইমু’ নম্বরে মোবাইল ফোনে কল আসে। রিসিভ করতেই বলা হয় চার যুবককে তারা অপহরণ করেছে। যারা অপহরণ করেছেন তারাও বাঙালি। তবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর