শিরোনাম
বুধবার, ১২ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু

দুই মাসে ঝিনাইদহে মারা গেছে নয়জন, মূল কারণ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ

শেখ রুহুল আমিন, ঝিনাইদহ

ভুল চিকিৎসায় একের পর এক প্রসূতির মৃত্যু ঘটছে ঝিনাইদহে। গত দুই মাসে অন্তত ৯ প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ একাধিকবার তদন্ত কমিটি গঠন করলেও অভিযুক্ত চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিকদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেলা সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, স্বাস্থ্য বিভাগের যথাযথ তদারকি না থাকায় এ জেলায় প্রসূতি মৃত্যু উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। জানা গেছে, ২৬ মার্চ শৈলকুপার মির্জাপুর গ্রামের শারমিন বেগম নামে এক প্রসূতিকে শহরের রাবেয়া হাসপাতালে সিজার করা হয়। পরে প্রসূতির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। একপর্যায়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোরে নিয়ে যেতে বলেন চিকিৎসক। প্রসূতির স্বামী আল-আমিন জানান, আমার স্ত্রীকে যশোরের একটি হাসপাতালে চার দিন আইসিইউতে রাখার পর মারা যায়। হালিমা খাতুন নামে হরিণাকুন্ডুর পার্বতীপুর গ্রামের এক প্রসূতিকে ৪ এপ্রিল শহরের প্রিন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার স্বামী হাবিবুর রহমান জানান, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সিজার করা হয়। এর পর প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এর কিছু সময় পর মারা যায় হালিমা। ৩০ মার্চ হরিণাকুন্ডুর তৈলটুপি গ্রামের এনামুল কবিরের স্ত্রী লাভলী বেগমকে কালীগঞ্জের দারুস-শেফা হাসপাতালে সিজার করা হয়। পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে একইভাবে মারা যান লাভলী। ১২ এপ্রিল সদর উপজেলার ভবিতপুর গ্রামের রিনা খাতুনকে শহরের শামীমা ক্লিনিকে সিজার করা হয়। এর দুই ঘণ্টা পর প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হতে থাকে। সেখানেই তিনি মারা যান। ১৬ এপ্রিল শামীমা ক্লিনিকে শৈলকুপার চাঁদপুর গ্রামের লিপি খাতুনকে সিজার করা হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পর কিডনি ও লিভার অচল হয়ে মারা যান লিপি। জেলা সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত হোসেন বলেন, এ ঘটনায় স্বাস্থ্য বিভাগ উদাসীন না হলে অভিযুক্ত চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেওয়া হতো।

সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, ক্লিনিকগুলোতে মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করা হয়েছে। এসব ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমরা মার্চ থেকে তদারকি জোরেসরে শুরু করেছি। মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছি। পোস্ট-অপারেটিভ কেয়ার ছাড়া অপারেশন করা যাবে না বলেও ক্লিনিক মালিকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর