বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

কালনী-কুশিয়ারায় তীব্র ভাঙন

♦ বসতভিটা হারিয়েছে ৩০ পরিবার ♦ ভাঙনের মুখে অর্ধশতাধিক ♦ ‘ঘুম নেই, নদীতীরের বাসিন্দাদের’

জাকারিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ

কালনী-কুশিয়ারায় তীব্র ভাঙন

বর্ষাকাল আসার আগেই হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কালনী-কুশিয়ারা নদীতে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এ আতঙ্কে দিনরাত পার করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘুম নেই তাদের চোখে। কখন জানি মাথাগোঁজার শেষ সম্বলটুকুও চলে যায় নদীগর্ভে সেই দুশ্চিন্তা তাদের। প্রতি বছর বর্ষা শুরু এবং শেষের দিকে এ আতঙ্ক থাকে নদী তীরবর্তী অসহায় মানুষের। তিন দশকে ভাঙনের কবলে পড়ে ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছেন এখানকার সহস্রাধিক পরিবার। এক মাসে ভাঙনে বসতভিটা হারিয়েছে ৩০টি পরিবার। ভাঙনের মুখে রয়েছে আরও অর্ধশতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি। নদীভাঙন রোধে টেকসই কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ভাঙন দেখা দিলে ফেলা হয় নামেমাত্র জিও ব্যাগ।

স্থানীয়রা জানায়, গেল তিন দশকে নদীতে বিলীন হয়েছে সহস্রাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও মসজিদ মাদরাসাসহ নানা স্থাপনা। বসতভিটা হারানো অসহায় এসব মানুষ এমনিতেই অর্থনৈতিকভাবে খুব দুর্বল। তাদের বেশির ভাগই কৃষি অথবা মৎস্য পেশায় জড়িত। কেউ কেউ অন্যত্র গিয়ে ঘরবাড়ি বানাতে পারলেও অধিকাংশেরই ঠাঁই হয়েছে খাসজমিতে। গেল এক মাসে ভাঙনের কবলে পড়ে বসতভিটা হারিয়েছে উপজেলার বদরপুর গ্রামের সামরিক মিয়া, সুজিত, অবিনাশ, অধীর, অশ্বিনী, দীপঙ্কর, মনোরঞ্জন, অরবিন্দ, নীলকান্ত, মতিন্ড, যামিনী, রমাকান্ত, গৌতম, সুশেন, লবু মিয়া ও ভূষেনসহ অন্তত ৩০টি পরিবার। নতুন করে মনিপুর, সৌলরী, কালনীপাড়া, পিরিজপুর ও কাকাইলছেওসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের আরও অর্ধশতাধিক পরিবার রয়েছে ভাঙন ঝুঁকিতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নদীতে এখন প্রবল স্রোত রয়েছে। স্রোতের তোড়ে ভাঙছে নদীতীরের মাটি। কিছু কিছু ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। কিছু ঘরবাড়ি রয়েছে ভাঙনের মুখে। কারও ঘরের অর্ধেক নদীতে ও অর্ধেক রয়েছে খাদের কিনারায়। তারা বাঁশ পুঁতে বাঁধ তৈরি করে শেষ সম্বলটুকু বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভাঙন শুরু হলেই তড়িঘড়ি করে ফেলা হয় কিছু জিও ব্যাগ। নামেমাত্র কাজ করেই দায়সারা হয়। তারা বলেন, বেশি ভাঙন কবলিত এলাকায় টেকসই গাইডওয়াল নির্মাণ করা হলে ভাঙন প্রতিরোধ করা যেত।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল ভৌমিক বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হবিগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, যেসব স্থানে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে সেসব স্থানে দ্রুত কাজ শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর