ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু ১৩ কিলোমিটারে ধীরগতিতে চলাচল করছে যানবাহন। বুধবার থেকেই রাজধানী ঢাকার মানুষ নাড়ির টানে কেউ ব্যক্তিগত যানবাহন, ট্রেন ওবাসে যে-যেভাবে পারছে বাড়ি ফিরছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত ফোরলেনে চলাচলকারী যানবাহনগুলো এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর ১৩ কিলোমিটার দুই লেনের সড়কে প্রবেশ করলে দীর্ঘলাইন পড়ে যায়। এখানে ধীর গতিতে চলাচল করতে হয় যানবাহনগুলোকে। একটু এলোমেলো চলাচল ও যান্ত্রিক সমস্যা হলেই রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। উত্তরবঙ্গসহ ২৩ জেলার ৯২টি সড়কের যানবাহন টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করে থাকে। ঈদের সময় এ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল আট-দশগুণ বেড়ে যায়। এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার রাস্তাটি এখনো চারলেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান রয়েছে। ফলে এখানে দুর্ভোগ পিছু ছাড়েনি উত্তরবঙ্গের ২৩ জেলার যাত্রীদের। তবে এ মহাসড়কে অনেকটাই স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারছেন ঘরমুখো মানুষ।
হানিফ পরিবহনের চালক রফিক মিয়া জানান, চন্দ্রা থেকে চারলেনের মহাসড়ক দিয়ে এলেঙ্গা পর্যন্ত আসার পর কিছুটা যানজটে পড়তে হয়। এ চাপ বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত থাকে। বাস চালক আজাদ জানান, এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কে যানবাহনের চাপ বেশি।
বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৩০ হাজার ৮৩৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এ থেকে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৮৮ লাখ ৭২ হাজার ৯৫০ টাকা। এর মধ্যে টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব অংশে ১৫ হাজার ৭২০টি যানবাহন পারাপার হয়। এ থেকে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ ২৬ হাজার ৯৫০ টাকা। সিরাজগঞ্জে সেতুর পশ্চিম অংশে ১৫ হাজার ১১৪ টি যানবাহন থেকে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, ঈদ সামনে রেখে যানবাহনের পারাপার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মীর মো. সাজেদুর রহমান জানান, ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত গাড়ির অতিরিক্ত চাপ ও ধীরগতি ছিল। এ ছাড়া এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু পর্যন্ত মহাসড়কে চারলেনের কাজ ও সড়কে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। দুপুরের পর যানচলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, ঈদ যাত্রায় মানুষ যাতে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারেন তার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। গাজীপুর থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত যানবাহনের স্বাভাবিক গতি থাকলেও এলেঙ্গা তুলনায় রাস্তা ছোট হওয়ায় গাড়ি স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না। ফলে প্রতিনিয়তই সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট হয়। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই বঙ্গবন্ধু সেতু গোলচত্বর থেকে ভূয়াপুর লিংক রোড দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া মহাসড়কে কোনো যানবাহন দুর্ঘটনা কবলিত হলেও যাতে তাৎক্ষণিক মহাসড়ক থেকে সরানো যায় তার জন্য র্যাকার সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।