রবিবার, ১৬ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
ভেজাল খাদ্য পরীক্ষা

অসম্পূর্ণ মোবাইল ল্যাব

♦ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় ল্যাবরেটরি ভ্যানটি। পরীক্ষায় সব পণ্যের রেজাল্ট পাওয়া যায়নি ♦ ‘কিছু কাজ এখনো বাকি, কুষ্টিয়ায় বড় একটি প্রোগ্রাম ছিলো, তাই ঢাকা থেকে এটি নিয়ে যাওয়া’

জাহিদুজ্জামান, কুষ্টিয়া

অসম্পূর্ণ মোবাইল ল্যাব

খাদ্যপণ্যে ভেজাল ধরে ফেলতে পারবে নিমেষেই-এমন মোবাইল ল্যাবরেটরি ভ্যান আনা হয়েছিল কুষ্টিয়ায়। ঢাকঢোল পিটিয়ে অনিরাপদ খাদ্যপণ্যের বিরুদ্ধে অভিযানও শুরু করা হয়েছিল। তবে মাঠে নামার পরই জানা গেল অসম্পূর্ণ রয়েছে ৪ কোটি টাকার এই ভ্রাম্যমাণ পরীক্ষাগার। ভ্যানটি এখন খুলনা সার্কিট হাউসে রাখা আছে। যন্ত্রাংশ সংযোজন, কেমিক্যাল ও রি এজেন্ট আনার পর জুলাইয়ে এটি কাজ শুরু করতে পারে, জানিয়েছেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের জেলা কর্মকর্তা। যদিও ভ্যানটি যে অসম্পূর্ণ সে বিষয়টি লুকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ৩ জুন কুষ্টিয়া শিল্পকলায় বিভাগীয় পর্যায়ে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মশালায় দেখানো হয় মোবাইল ল্যাবরেটরি ভ্যানটি। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (অতিরিক্ত সচিব) আবু নূর মো. শামসুজ্জামান সে সময় জানান, দুধ, মধু ও বিভিন্ন ধরনের মসলায় ভেজাল ধরাসহ ৩১ ধরনের পরীক্ষা এই ভ্রাম্যমাণ ল্যাবরেটরিতে করা যাবে। মিলবে তাৎক্ষণিক ফলাফল, নেওয়া হবে আইনগত ব্যবস্থাও। তিনি বলেন, গাড়িগুলো বিভিন্ন মার্কেটের সামনে যাবে। সেখানে নমুনা সংগ্রহের পর ভেজাল থাকলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

পরদিন সকালে কুষ্টিয়া শহরের লাল মোহাম্মদ ওয়েল মিল ও মৌবন রেস্টুরেন্টসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় ল্যাবরেটরি ভ্যানটি। এসব পরীক্ষায় সবধরনের পণ্যের রেজাল্ট পাওয়া যায়নি। দু-এক জায়গায় অসংগতি মিললেও নেওয়া হয়নি শাস্তিযোগ্য ব্যবস্থা।

কুষ্টিয়ার নিরাপদ খাদ্য অফিসার সজিব পাল সে সময় বলেছিলেন, আমাদের ল্যাব এখনো পরিপূর্ণ নয়। পরিপূর্ণ হলে রেডিমেট খাবারও টেস্ট করা যাবে। এটি খুলনায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

খুলনার নিরাপদ খাদ্য অফিসার মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ভ্যানটি খুলনা সার্কিট হাউসে রাখা আছে। এর যন্ত্রপাতিগুলো ভ্যানের মধ্যে রাখা আছে। বেজমেন্টের সঙ্গে সেট করতে হবে। এ জন্য এটির কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। কুষ্টিয়াতে বড় একটি প্রোগ্রাম ছিল, তাই ঢাকা থেকে এটি নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আর ঢাকায় নেওয়া হয়নি। খুলনায় রাখা আছে। জিপিএস লাগানোসহ কিছু কাজ এখনো বাকি আছে। জুলাই মাসের প্রথম দিকে ঢাকা থেকে টেকনিশিয়ান এনে অথবা লোকাল মিস্ত্রি দিয়ে যন্ত্রগুলো সেট করা হবে। তিনি বলেন, অনেক দামি যন্ত্রপাতি খারাপ রাস্তায় গেলে ঝাঁকিতে পড়ে যেতে পারে। তাই ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে না। এদিকে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) জাকারিয়া ভ্যানটি যে অসম্পূর্ণ সে বিষয়টি লুকানোর চেষ্টা করেছেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, কিছু সিস্টেম ডেভেলপ করতে হবে, কাজের সঙ্গে কর্মীদের অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। এসবের চেষ্টা চলছে। ভ্যানটির কোনো সমস্যা নেই। তবে, কুষ্টিয়ার পরে কোথাও কাজ শুরু করেছে কি-না সে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তিনি। তিনি বলেন, কিছু টেস্টের ফলাফল তাৎক্ষণিক পাওয়া যায় না। ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এ বছরে এ রকম ৭টি ভ্যান কেনা হয়েছে সারা দেশের জন্য। আর আগে আরেকটি ছিল। একেকটি ভ্যানের পেছনে খরচ হয়েছে ৪ কোটি টাকা। ভ্রাম্যমাণ পরীক্ষাগার প্রতিনিয়ত রাউন্ড আকারে বিভাগে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। একটি জেলায় ২-৩ দিন করে অবস্থান করবে ভ্যানটি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর