রবিবার, ২৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

ড্রেন ভেঙে পানিবন্দি শহীদ পরিবার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ড্রেন ভেঙে পানিবন্দি শহীদ পরিবার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভায় পানিবন্দী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার -বাংলাদেশ প্রতিদিন

তিন বছরের বেশি সময় ধরে পানিবন্দি হয়ে রয়েছেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি। অভিযোগ, প্রায় তিন বছর আগে একটি ড্রেন ভেঙে ফেলার পর থেকেই তারা এ দুর্ভোগে আছেন। বর্ষা এলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে পরিবারটি। বৃষ্টির পানি আর চোখের পানি যেন এ পরিবারে একাকার। মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ার জো নেই। সর্বদা আতঙ্কে থাকতে হয় কোলের শিশুটি বুঝি পানিতে পড়ে গেল। স্বজনদেরও দাওয়াত দিতে লজ্জা হয়। বাধ্য হয়ে এখন নিজেরা দিন-রাত মটর চালিয়ে পানি সেচ করেন। তাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভার সড়ক বাজার এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আলমগীর করিম (বীরপ্রতীক) এর বাসভবনে বসবাস করা ভাই ও বোনের পরিবার এ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

বাড়ির উঠান এখন পুকুরে পরিণত হয়েছে। বাড়ির পিছনের দিকে পুকুরের পাশে বেশ উঁচু করে দেওয়াল দেওয়া আছে যেন পানি ঢুকতে না পারে। প্রবেশমুখেও রয়েছে পানি আটকানোর ব্যবস্থা। এতে আশপাশ থেকে সাময়িক সময়ের জন্য পানি আসা বন্ধ করা গেলেও বৃষ্টির পানিতে হাঁটু সমান পানি জমে যায় ওই বাড়িতে। আশপাশের ছয়টি পরিবারও তখন দুর্ভোগের মুখে পড়ে।

শহীদ আলমগীর করিমের ভাগিনা মো. রুহুল আমিন সুমন অভিযোগ করেন, প্রায় তিন বছর আগে একটি ড্রেন ভেঙে ফেলার পর থেকেই তারা এ দুর্ভোগে আছেন। ওই ড্রেন দিয়েই তাদের বাড়িসহ আশপাশের বাড়ির পানি সরে যেত। উন্নয়ন কাজের জন্য ড্রেন ভেঙে ফেলা হলেও এর বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। পৌর মেয়র, ইউএনওসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে গিয়েছি কোনো বিহিত পাইনি। পৌর কর্তৃপক্ষ ড্রেন নির্মাণের বিষয়ে একাধিকবার আশ্বাস দিলেও কোনো লাভ হয়নি। আমি এখন এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কেননা, তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে যেকোনো ধরনের সহায়তার জন্য যেন ওনার দ্বারস্থ হই।

শহীদ আলমগীর করিমের ভাতিজা মো. মারজান উল করিম সুজন বলেন, মাঝে মাঝে বাড়ির উঠানে ও ঘরে হাঁটু পানি থাকে। একাধিকবার বাড়িতে সাপ উঠেছে। সব সময় ভয়ে থাকি আমার ছোট দুই সন্তান কখন পানিতে পড়ে যায়। আমরাসহ আশপাশের কয়েকটি পরিবারের লোকজন চরম দুর্ভোগে আছি। পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না।

আখাউড়া পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শিপন হায়দার বলেন, এ পরিবারটির দুর্দশার দৃশ্যটি খুব কষ্টের। এভাবে দিনের পর দিন মানুষ পানিবন্দি হয়ে থাকতে পাওে না। বিষয়টি নিয়ে আমি পৌরসভার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। দীর্ঘদিনেও এর কোনো সুরাহা হয়নি।

আখাউড়া পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ফয়সাল আহমেদ জানান, পানি সরানোর জন্য একটি ড্রেন নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন। ইতোমধ্যেই একজন ঠিকাদারকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ড্রেন নির্মাণের ঠিকাদার মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, ড্রেন নির্মাণের জন্য পৌরসভা যে জায়গাটি দেখিয়েছে সেটি উপজেলা ডাকঘরের। তাদের জায়গা দিয়ে ড্রেন করতে দেবে না। ডাকঘর কর্তৃপক্ষ তাই জানিয়েছে।

সর্বশেষ খবর