শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত রেললাইনে

ভাঙ্গা-যশোর রেল রুট : গোপালগঞ্জসহ চার জেলায় অর্থনীতির গতি বাড়াবে

আমিনুল হাসান শাহীন, গোপালগঞ্জ

সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত রেললাইনে

গোপালগঞ্জ, নড়াইল, খুলনা, যশোরসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ পদ্মা সেতু হয়ে সহজেই ট্রেনে ঢাকা যেতে পারবে। ভাঙ্গা-কাশিয়ানী-যশোর রেললাইন নির্মাণের পর এ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষ খুলনা থেকে ৩ ঘণ্টা ও যশোর থেকে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় পৌঁছতে পারবে রাজধানীতে। ঢাকা থেকে যশোরের দূরত্ব কমবে ১৯৩ কিলোমিটার। এর আগে ৩০ ও ৩১ মার্চ ৮৭ দশমিক ৩২ কিলোমিটার এ রেললাইনে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করেছে। এখন এ লাইনে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে এ এলাকার মানুষ। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এতে এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যবসাবাণিজ্য ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি হবে। কম সময়ে যাত্রী, কৃষিপণ্য ও মালামাল পরিবহন সহজ হবে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি আসবে। স্থানীয়রা এ রুট ব্যবহার করে দ্রুত গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা ও বোনাপোলে সরাসরি ট্রেন চালুর দাবি জানিয়েছে। রেলওয়ে সূত্রমতে, এ রেললাইন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। ২০১৬ সালের ৩ মে একনেকে ‘পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্প’ নামে এর অনুমোদন হয়। এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এ প্রকল্পে ব্যয় হয় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে যশোরের রূপদিয়া পর্যন্ত ৮৭ দশমিক ৩২ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপনে ব্যয় ধরা হয় প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ও চীনের অর্থায়নে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ (সিআরসি) এ রেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। ভাঙ্গা-যশোর অংশের ট্র্যাক ইনচার্জ আনোয়ারুল কবির বলেন, নতুন এ ট্র্যাক করা হয়েছে চীনা প্রযুক্তিতে। ব্যবহার করা হয়েছে কংক্রিটের স্লিপার। এটি যেমন টেকসই, তেমন রক্ষণাবেক্ষণ খরচও অনেক কম হবে। নতুন এ রেললাইন দেশের রেল নেটওয়ার্ককে বিশেষ উচ্চতায় নিয়ে গেছে। প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, জুলাইয়ে এ রুটে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল করতে পারে। সেনাবাহিনীর তদারকিতে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিআরইসি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্রডগেজ রেললাইন স্থাপন করেছে। পিডি আরও বলেন, ‘ভাঙ্গা-যশোর অংশের কাজ শেষে চলছে ট্রায়াল রান। এরপর পদ্মা সেতু হয়ে নতুন রুটে সোজা পথে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলবে। নতুন এ রেলপথ চালু হলে যশোর থেকে দূরত্ব কমবে অন্তত ১৯৩ কিলোমিটার। যুক্ত হতে পারবে ট্রান্স এশিয়ান রেল নেটওয়ার্কে। গোপালগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সেক্রেটারি সেখ মাসুদুর রহমান বলেন, এ রেললাইন ব্যবহার করে ঢাকা ও বেনাপোল রুটে গোপালগঞ্জ থেকে ট্রেন চালু হলে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জ, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল ও খুলনা যাতায়াত সহজ হবে। উদ্যোক্তারা বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি পণ্য সরাসরি পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহজে পরিবহন করতে পারবেন। এ অঞ্চলে গড়ে উঠবে নতুন নতুন শিল্পকারখানা। হবে বিপুল কর্মসংস্থান। গোপালগঞ্জের প্রান্ত ফিশ অ্যান্ড এগ্রিকালচারের স্বত্বাধিকারী কামরুল হুদা মিলটন বলেন, কম সময়ে যাতায়াত করা যাবে। কৃষিপণ্য ও মালামাল সহজে পরিবহন করা যাবে। সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে। ব্যবসাবাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে সঞ্চার হবে নতুন গতি।

সর্বশেষ খবর