বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল

বন্ধ বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

বন্ধ বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা ৩ জুন থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার সুবিধাবঞ্চিত ও অসহায় রোগীরা।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ১৩ জুন এ হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করেন তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক প্রয়াত ডা. মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান। বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চালু করা হয়েছিল এ সেবা। এ হাসপাতালে জেলার রোগীসহ পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকেও অনেক রোগী এসে চিকিৎসা নিতেন। এ স্বাস্থ্যসেবা চালু করায় সাধারণ রোগীরা অনেক খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রোগীরা এখন পড়েছেন বিপাকে। জেলার দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীদের বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। এ স্বাস্থ্যসেবা চালুর পর চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকরা ১১ হাজার ৩৬০ জন রোগী দেখেছেন। যেখান থেকে আয় হয়েছে ৩৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ টাকা। গত বছরের জুন থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত এসব রোগী দেখার টাকা থেকে সম্মানী হিসেবে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে ফেব্রুয়ারিতে হাসপাতালে স্বাস্থ্য বিভাগের এক সভায় বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় রোগী দেখা থেকে প্রাপ্ত টাকা চিকিৎসকদের না দেওয়ার নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের এক পরিচালক। ফেব্রুয়ারি থেকে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় নিযুক্ত চিকিৎসকদের সম্মানী বন্ধ রয়েছে। এরপর থেকেই হাসপাতালে বিকালে রোগী দেখার আগ্রহ হারাতে শুরু করেন চিকিৎসকরা। ৩ জুন থেকে কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় রোগী দেখা বন্ধ করে দেন চিকিৎসকরা।

হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন জানান, বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় হাসপাতালে রোগী দেখার চেয়ে ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন চিকিৎসকরা। এতে তাদের আয়-রোজগার বেশি হয়। হাসপাতালের এক সভায় চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের এক পরিচালক জানান, দেশে যেসব সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালু হয়েছে, সেখানকার কোথাও চিকিৎসকদের সম্মানী দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৩ জুন এ হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে যোগ দেন মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান। তিনি যোগদানের পর থেকে হাসপাতালে যথাসময়ে চিকিৎসকের উপস্থিতিসহ সব বিভাগে স্বাস্থ্যসেবায় ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছিল। পাশাপাশি হাসপাতাল থেকে সরকারি কোষাগারে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব জমা হয়। তার প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে একমাত্র হাসপাতাল হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে সকালের পর দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্যাথলজি বিভাগ চালু হয়। ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বিভাগের সব হাসপাতালের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিবেচনায় প্রথম হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ হয়ে মারা যান তিনি। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, বৈকালিক সেবার বিষয়ে আলোচনা চলছে। আগে বৈকালিক সেবার সব বিভাগ খোলা থাকত। এখন বিষয়টি রিশিডিউলিং করা হচ্ছে। প্রতিটা বিভাগ হয়তো চালু থাকবে না। কাস্টমাইজড করে কিছু বিভাগ কমিয়ে আবার চালু করা হবে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রতন কুমার ঢালী বলেন, কিছু জটিলতার কারণে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ আছে। আমরা সীমিত পরিসরে সেবাটা আবার চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সর্বশেষ খবর