বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

কাঁঠাল পাকাতে কেমিক্যাল

কেমিক্যাল মিশ্রিত ফল খেলে বিভিন্ন রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কিডনি ড্যামেজ, কিডনিতে পাথর ও হাড় ক্ষয় হতে পারে। দীর্ঘদিন কেমিক্যালযুক্ত কোনো ফল খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে।

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

কাঁঠাল পাকাতে কেমিক্যাল

কাঁঠালে রড ঢুকিয়ে ছিদ্র করে দেওয়া হয় কেমিক্যাল (গোল চিহ্নিত) - বাংলাদেশ প্রতিদিন

টাঙ্গাইলের সখীপুরে কাঁঠালের মধ্যে রড ঢুকিয়ে ছিদ্র্র করে ¯েপ্র করা হচ্ছে ক্ষতিকর কেমিক্যাল। উপজেলার বড়চওনা, মহানন্দপুর, কুতুবপুর, কচুয়া, নলুয়া, তক্তারচালাসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে এভাবে কেমিক্যাল প্রয়োগ করা হচ্ছে। মানবদেহের ক্ষতিকর এই কেমিক্যালে পাকানো কাঁঠাল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাঠানো হচ্ছে। এক রাতের মধ্যে যেন কাঁঠাল পেকে যায় সেজন্যই এ পদ্ধতিতে এক ধরনের কেমিক্যাল দেওয়া হয় বলে জানান কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা। মহানন্দপুর বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, সাপ্তাহিক হাট-বাজারে কাঁচা কাঁঠাল নিয়ে আসেন সাধারণ বিক্রেতা ও গ্রামের কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাট থেকে সেই কাঁঠাল কেনেন ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বড় ব্যবসায়ীরা। তারপর সেই কাঁঠাল স্তূপ করে রেখে এক ধরনের কেমিক্যাল প্রয়োগ করেন শ্রমিকরা। কেমিক্যাল প্রয়োগের জন্য প্রথমে কাঁঠালের মধ্যে রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তারপর সেখানে কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি দেওয়া হয়। তারপর সেই কাঁঠাল ট্রাক বা পিকআপে ঢাকা, সিলেট, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক জানান, এটা এক প্রকার কেমিক্যাল। যা দিলে রাতের মধ্যেই সব কাঁঠাল পেকে যাবে। কাঁঠালের মধ্যে চিকন একটি রড ঢোকাই, তারপর সামান্য পরিমাণ কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি দিই। সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (ইউএসও) ডা. মো. রুহুল আমিন মুকুল বলেন, ফল পাকানোর জন্য ক্লোরোইথিল ফসফোনিক অ্যাসিড, গ্লাইকল, ইথাল ইত্যাদি কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যে কোনো ধরনের কেমিক্যাল মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। কেমিক্যাল মিশ্রিত ফল খেলে বিভিন্ন রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। ব্যক্তি বিশেষের কিডনি ড্যামেজ, কিডনিতে পাথর ও হাড় ক্ষয়সহ নানা ধরনের রোগ হতে পারে। তবে দীর্ঘদিন কেমিক্যালযুক্ত কোনো ফল খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে। তাই কেমিক্যালযুক্ত খাবার না খাওয়াই উত্তম। এ ছাড়া যারা এই কেমিক্যাল ¯েপ্র বা প্রয়োগ করে তাদের চামড়া পুড়ে যেতে পারে, চোখে লাগলে অন্ধ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

উপজেলার মহানন্দপুর হাটে হায়দার আলী নামে এক খুচরা কাঁঠাল বিক্রেতা বলেন, এ বছর অনাবৃষ্টির কারণে কাঁঠাল খুবই কম ধরেছে। তারপরও অন্য বছরের তুলনায় এ বছর কাঁঠালের দাম অনেক কম।

একাধিক ব্যবসায়ী জানান, আসলে কাঁঠালের দামের কোনো শেষ নেই, যার কাছ থেকে যেভাবে ক্রয় করা যায়। কাঁচামাল হিসেবে অর্ধেক লাভ হিসাব করে কাঁঠাল ক্রয় করে থাকি। তবে বড় কাঁঠালের চেয়ে মিডিয়াম সাইজের কাঁঠালের দাম একটু বেশি। এই সাইজের কাঁঠালের চাহিদা বেশি থাকে। সখীপুর উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর কানিজ ফাতেমা বলেন, কাঁঠাল, কলা বা আম দ্রুত পাকানোর জন্য যা দেওয়া হয় তা নিশ্চয়ই ক্ষতিকর। তার জন্য আমাদের সবার সচেতন থাকতে হবে। এ ছাড়া আমি নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। তারপরও এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর