রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষে নানা উদ্যোগ

দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী

গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষে নানা উদ্যোগ

আমদানি-নির্ভরতা কমাতে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষে শুরুতেই সফলতা পেয়েছেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার কৃষকরা। উপজেলার ১০টি প্রদর্শনী প্লটে চাষ করা পিঁয়াজের বাম্পার ফলন হবে, আশা করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।

সারা দেশের মধ্যে রাজবাড়ী পিঁয়াজ উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। জেলার প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে পিঁয়াজের আবাদ হয়। দেশের চাহিদার ১৪ শতাংশ পিঁয়াজের জোগান দেন রাজবাড়ীর কৃষকরা। পিঁয়াজ চাষে জেলার প্রথম স্থান বালিয়াকান্দি। এ উপজেলার কৃষকরা শীতকালীন পিঁয়াজ চাষ করে থাকেন। তবে কৃষি বিভাগের সহায়তায় উপজেলার বেশ কয়েকজন পিঁয়াজ চাষি গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পিঁয়াজ চাষের জন্য বারি পিঁয়াজ ৫ ও বিপ্লব বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে পিঁয়াজের আবাদ শুরু করে পাঁচজন কৃষক। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় জমির বীজ চাষ ও সার বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে। ২০০ শতাংশ (২ একর) জমিতে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষ হচ্ছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

সম্প্রতি বালিয়াকান্দি উপজেলার বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী পরিদর্শনে আসেন লাভজনক পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো ও পিঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধির কর্মসূচি পরিচালক রেজওয়ানা রহমান। গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষ নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময় প্রদর্শনী দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বালিয়াকান্দিতে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি। উপজেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ উৎপাদন স্বপ্নের মতো ছিল। এরপর ঝুঁকি তো থাকেই। গত বছর বালিয়াকান্দিতে ভালো ফলন হয়েছে। বালিয়াকান্দির কৃষি বিভাগ প্রণোদনা দিয়েছে। পিঁয়াজ চাষে সহায়তার পাশাপাশি পরামর্শ দিচ্ছে। যে কারণে পিঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। ১০০ থেকে ১১০ দিন জীবনকালে প্রতি হেক্টর জমিতে ৪৫ মেট্রিক টন পর্যন্ত ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস থেকে জমির পিঁয়াজ বাজারে বিক্রি করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছি। শুরুর দিকে কৃষকদের তেমন আগ্রহ ছিল না। বর্তমানে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। আর কয়েকদিন পর এই পিঁয়াজ হার্ভেস্ট করতে পারবেন। এ সময় পিঁয়াজের দাম বেশি থাকে। যে কারণে কৃষকরা লাভবান হবেন।

লাভজনক পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো ও পিঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধির কর্মসূচি পরিচালক রেজওয়ানা রহমান বলেন, আমরা চেষ্টা করছি প্রতিটি জেলায় উদ্যোক্তা তৈরি করতে। যেসব উদ্যোক্তা বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে জেলায় গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষিদের সহায়তা করতে পারবেন। যদি উদ্যোক্তারা সেটি করতে পারেন তবে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ উৎপাদনে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে না। পিঁয়াজ যেন আমদানি করতে না হয়। আমরা সেজন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি।

সর্বশেষ খবর