মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

সমস্যা জর্জরিত সদর হাসপাতাল

রোকনুজ্জামান পারভেজ, শরীয়তপুর

সমস্যা জর্জরিত সদর হাসপাতাল

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের শয্যা সংকটে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নানা সমস্যায় জর্জরিত শরীয়তপুর সদর আধুনিক হাসপাতাল। রোগ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও তার সুফল পাচ্ছে না এ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা। দালালদের খপ্পরে পড়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীদের যেতে হচ্ছে ব্যয়বহুল বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। রয়েছে ডাক্তারসহ জনবলের অভাব। রয়েছে ওষুধ স্বল্পতা। রয়েছে রোগীর চাপ। রোগীদের জায়গা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। হাসপাতাল ভবনটি পুরাতন। ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। পলেস্তারা ভেঙে পড়ছে। সেখানে ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিতে হচ্ছে।

স্থানীয়রা বলছে, শরীয়তপুর সদর আধুনিক হাসপাতালে এখনো আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি এখনো। ১০০ শয্যার হাসপাতাল নামে হলেও এখানে ৫০ শয্যার হাসপাতালের জনবলও নেই। শয্যা সংকটে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালে সব ধরনের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে দীর্ঘদিন ধরে সেসব অব্যবহৃত রয়েছে। হাসপাতালে তিনটি এক্সরে মেশিনের একটি অচল রয়েছে। দুটি আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন, দুটি ইসিজি মেশিন, মাল্টি প্যারামিটার প্যাশেন্ট মনিটর, পাল্্স অক্সি মিটারসহ বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি নষ্ট। এ হাসপাতালে ডাক্তার থাকার কথা ৫২ জন। শূন্য পদ রয়েছে ১৭টি। পরিচ্ছন্নতাকর্মী, জেনারেটর অপারেটর, আয়া ও বিভিন্ন মঞ্জুরিকৃত পদের সংখ্যা ৭৮টি। এর মধ্যে শূন্য রয়েছে ২১টি। প্রতিদিন আউট ডোরে ভিড় জমায় ৫ থেকে ৬০০ রোগী। ইন ডোরে রোগীর চাপ তো আছেই। ইনডোরে বেশির ভাগ ওষুধ বাইরে থেকে ক্রয় করতে হয় রোগীদের। নামে মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। রয়েছে ময়লার দুর্গন্ধ। দুপুর ১টার পর বেশির ভাগ ডাক্তার প্রাইভেট ক্লিনিকে চলে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

সদর আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক মামুন বলেন, শরীয়তপুর একটি মাত্র হাসপাতাল যেখানে সিজার বা গর্ভবতী মায়েদের বাইরে থেকে ওষুধ ক্রয় করতে হয় না। টাকা ছাড়া সিজার করা হয়। আমরা চেষ্টা করি নরমাল ডেলিভারি করানোর। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার মিতু আক্তার বলেন, সব ডাক্তার উপস্থিত থাকেন। রাউন্ডে থাকার কারণে তাদের রুমে তালা থাকে। আমাদের ডাক্তার স্বল্পতাসহ জনবলের অভাব রয়েছে। তাই অল্প জনবল দিয়ে হাসপাতাল পরিচালনা করতে হয়।

তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালের ভবনটি ঝুঁকিতে রয়েছে। রয়েছে জনবলের অভাব। দীর্ঘদিন ধরে চোখের ডাক্তার নেই। ঢাকায় চিঠি দিয়ে যাচ্ছি কিন্তু ডাক্তার পাচ্ছি না। দালাল দৌরাত্ম্য ঠেকাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। নতুন ভবনটি চার বছর আগে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। এখন পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ হয়নি।

সর্বশেষ খবর