বুধবার, ৩ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

পানিশূন্য চলনবিল

অস্তিত্ব সংকটে জলজ প্রাণী

নাটোর প্রতিনিধি

পানিশূন্য চলনবিল

চলছে আষাঢ় মাস। তার পরও নাটোরের সিংড়া উপজেলায় চলনবিল পানিশূন্য হয়ে রয়েছে। এর সঙ্গে এ অঞ্চলের ছয়টি নদীরও একই অবস্থা। এতে এ অঞ্চলে মাছসহ জলজ প্রাণী অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে সরকারকে পরিকল্পিত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা। স্থানীয় মৎস্য বিভাগ জলজ প্রাণীর অস্তিত্ব সংকটের কথা স্বীকার করে বলছে, অনাবৃষ্টি ও দাবদহের কারণে এ পরিস্থিতি। কথিত আছে, সারা বছর পানি চলমান থাকায় এ বিলের নাম হয় চলনবিল। এক সময় এ বিলসহ এ অঞ্চলের নদী-খালে সারা বছর মাছ পাওয়া যেত। তবে এখন তা শুধুই কল্পনা। প্রায় ৭০ বর্গকিলোমিটারের চলনবিলের মধ্যে নাটোরের সিংড়া উপজেলায় পড়েছে ২৬ বর্গকিলোমিটার। বর্তমানে সিংড়া উপজেলায় বিলের এ ২৬ বর্গকিলোমিটার ও আত্রাই, নাগর, গুড়, বারনই, নন্দকূজা ও বানগঙ্গা নদী প্রায় পানিশূন্য। ডাহিয়া এলাকার মামুন অর রশীদ বলেন, ‘১০ বছর আগেও চলনবিলে ছয় মাস ও নদীতে সারা বছর পানি থাকত। সারা বছরই এসব জায়গায় পর্যাপ্ত মাছ ও পাখি থাকত। বর্তমানে বিলে দুই মাস ও নদীতে তিন মাস পানি থাকে। ছয়টি বড় নদীতে হাঁটুর নিচ পরিমাণ পানি থাকে। এ কারণে মাছশূন্য হয়ে যাচ্ছে চলনবিল। চাঁন্দা, পাবদাসহ নানা ধরনের দেশি মাছ এ বিল থেকে হারিয়ে গেছে। আয়েশ গ্রামের সোহরাব হোসেন জানান, নদীগুলোতে সারা বছরই পানি থাকত। এখন তা থাকে না। এ কারণে নৌপথে চলাচল আরামদায়ক ও নিরাপদ হলেও তা থেকে এখন বঞ্চিত হচ্ছে এ এলাকার মানুষ। পরিবেশ ও প্রকৃতি আন্দোলনের সভাপতি মো. এমরান আলী রানা বলেন, চলনবিল পানিশূন্য হয়ে পড়ায় জলজ প্রাণীগুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। চলনবিলে অবাধে পুকুর খনন ও অপরিকল্পিত রাস্তা নির্মাণের ফলে এ পরিস্থিতি। চলনবিল রক্ষায় সবাইকে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি সরকারকে নজর দেওয়ার দাবি জানান তিনি। মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, গত বছর সিংড়া উপজেলার আত্রাই, নাগর, গুড়, বারনই, নন্দকূজা ও বানগঙ্গা নদীসহ প্রায় ২৩ হাজার হেক্টর উম্মুক্ত প্লাবনভূমি থেকে ১২ হাজার টন দেশি প্রজাতির মাছ আহরণ করা হয়েছিল। সিংড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন বলেন, ‘টানা দুই মাসের দাবদহের কারণে এ পরিস্থিতি। পানিশূন্য চলনবিলের ১২টি অভয়াশ্রমে মাছসহ জলজ প্রাণী রয়েছে। এ অভয়াশ্রমগুলোতে সেচ দিয়ে তাদের টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। চলতি বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও বিলে পর্যাপ্ত পানি এলে এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।’

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর