অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে যে কোনো ঋতুতে সামান্য বৃষ্টিতে কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বর্ষাকালে এটা পুরোপুরি জলমগ্ন হয়ে যায়। পুরো এলাকা যেন বিলে পরিণত হয়। এ কারণে এ সময় কোনো ক্রেতা এখানে আসতে চান না। এক যুগ ধরে এই জলাবদ্ধতার সমস্যা লেগে আছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম। ভোগান্তিতে পড়ছেন গাড়িচালক, পথচারী ও স্থানীয়রা। বাড়ছে উৎপাদন খরচ।
বিসিক সূত্র জানায়, ৫৪ দশমিক ৩৫ একর জমিতে গড়ে উঠে কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরী। বিসিকে ১৪১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩০টি প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে রয়েছে। গত অর্থবছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার পণ্য উৎপাদন করা হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মালবাহী পরিবহনগুলোকেও নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, ড্রেনের ময়লা পানি সড়কে উঠে পড়েছে। জলাবদ্ধতায় কোনটা ড্রেন আর কোনটা সড়ক বোঝা মুশকিল। এ ময়লা পানি মাড়িয়ে নারী-পুরুষ শ্রমিকরা কর্মস্থলে যাওয়া-আসা করছেন। পণ্য নিয়ে আসা ট্রাকচালক মো. মকবুল হোসেন জানান, জলাবদ্ধতার কারণে গাড়ি চালাতে অসুবিধা হচ্ছে। কোথায় গর্ত আছে সেটা বোঝা যাচ্ছে না। এতে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় তাদের।স্থানীয় অধিবাসী আফাজ উদ্দিন জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটুসমান পানি হয়ে যায়। হাঁটাচলা করতে অসুবিধা হচ্ছে। ময়লা পানি দিয়ে চলাচলে তারা চর্মরোগসহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছেন। কুমিল্লা ফ্লাওয়ারের ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা বিক্রম চন্দ্র দাস জানান, জলাবদ্ধতার কারণে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে অসুবিধা হচ্ছে। এতে তাদের উৎপাদনে খরচের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে জলাবদ্ধতার কারণে অনেক ক্রেতা এখানে আসতে চান না।
কুমিল্লা বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. মুনতাসীর মামুন বলেন, নগরীর বিভিন্ন অঞ্চলের পানি বিসিক শিল্পনগরী হয়ে নামে। পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে বিসিক এলাকার রাস্তা ও ড্রেনের অর্ধেক কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি রাস্তা ও ড্রেনের কাজ করতে প্রাক্কলন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। বিসিকের রাস্তা ও ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হলে জলাবদ্ধতা থাকবে না।