বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

এগিয়ে যাচ্ছে মোংলা বন্দর

♦ বৃদ্ধি পেয়েছে আমদানি-রপ্তানি জাহাজ আগমন ♦ মিলছে পদ্মা সেতু চালুর সুফল, গড়ে উঠছে নতুন শিল্পকারখানা

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর মোংলায় আমদানি-রপ্তানি ও বিদেশি জাহাজের আগমনসহ সব সূচকেই এখন ঊর্ধ্বগতি। পদ্মা সেতু চালুর পর মোংলা বন্দরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে নতুন শিল্পকারখানা। সম্প্রসারণ হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল তথা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের দ্বিতীয় লাইফলাইন মোংলা বন্দর ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছে।

বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, মোংলা বন্দরে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮২৭টি জাহাজ এসেছিল। সেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এসেছে ৮৪৬টি। অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় পরের অর্থবছরে ১৯টি জাহাজ বেশি এসেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ বন্দরে জাহাজ আগমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৪০টি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি এসেছে ৬টি জাহাজ।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের গণসংযোগ বিভাগের দেওয়া তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯৯.০৫ লাখ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল। পরের অর্থবছরে ১০৮.৬৮ লাখ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৬৫৮৩ টিইইউজ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল। পরের অর্থবছরে ৩১০৪৪ টিইইউজ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের এ বন্দরের মাধ্যমে গাড়ি আমদানি হয়েছিল ১৩৫৭৬টি। পরের অর্থবছরে ১৫৩৪০টি গাড়ি আমদানি হয়েছে। বেড়েছে ১৭৬৪টি। ১০ বছরে এ বন্দর দিয়ে আমদানি করা গাড়ির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৭ লাখ ২৫ হাজার ৯৬৯টি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয় ৩০২ কোটি টাকা। পরের অর্থবছরে ৩১৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। রাজস্ব আয় ২৮.৫৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর রাজধানীর সব থেকে কাছের বন্দর মোংলায় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের মহাকর্মযজ্ঞের পর চাপ সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, সব সূচক পজিটিভ ধারায় থাকার ফলে বন্দরে নিট মুনাফা ২৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বন্দর দিয়ে ৩৮টি দেশে পণ্য রপ্তানি হয়। পদ্মা সেতু চালুর পর মোংলা বন্দরে সাড়ে ৩ ঘণ্টা থেকে ৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা ও তার পার্শ্ববতী জেলা থেকে পণ্য আনা-নেওয়া করা যায়। এক্ষেত্রে বন্দর ব্যবহারকারীদের সময় এবং অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে। পদ্মা সেতুর কল্যাণে রাজধানীর সব থেকে কাছের বন্দর হওয়ায় মোংলা হয়ে পোশাকশিল্পের বিভিন্ন পণ্যও যাচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। মোংলা বন্দরের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপন করায় পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে নবদিগন্তের সূচনা হতে যাচ্ছে। মোংলা বন্দরে জাহাজ হ্যান্ডলিং দ্রুত ও নিরাপদ হওয়ায় বিদেশি ব্যবসায়ীরাও এ বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ফলে এ বন্দর দিয়ে এখন পণ্য আমদানি-রপ্তানি বেড়ে চলেছে। পণ্যগুলো নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে আমদানি-রপ্তানি করার ক্ষেত্রে মোংলা বন্দর সার্বিক দিক দিয়ে প্রস্তুত রয়েছে।

সর্বশেষ খবর