শিরোনাম
শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

পদ্মা-গড়াইয়ে তীব্র ভাঙন

জাহিদুজ্জামান, কুষ্টিয়া

পদ্মা-গড়াইয়ে তীব্র ভাঙন

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় নদী ভাঙন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রমত্তা পদ্মা ও এর প্রধান শাখা নদী গড়াইয়ের তীব্র ভাঙনে দিশাহারা হয়ে পড়েছে তীরবর্তী মানুষ। নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এবার পদ্মা নদীর সাতটি পয়েন্টে ও গড়াই নদীর চারটি পয়েন্টে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে কৃষি জমি, ঘরবাড়ি, রাস্তা ও বাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদী তীরবর্তী জনপদ টিকিয়ে রাখতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আতঙ্কিত বাসিন্দারা। সংশ্লিষ্টরা জানান, পদ্মা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৌলতপুর উপজেলার চারটি ও ভেড়ামারা উপজেলার তিনটি পয়েন্টে ভাঙন শুরু হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে দৌলতপুরের চিলমারী ইউনিয়নের উদয়নগর বিওপি ক্যাম্পের কাছে ২০০ মিটার অংশ, মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলাপাড়ায় ১ কিলোমিটার, মরিচা ইউনিয়নের ভুরকাপাড়ায় ২ কিলোমিটার, একই ইউনিয়নের কোলদিয়াড়ে ৭০০ মিটার জায়গাজুড়ে পদ্মা নদীর ডানতীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভেড়ামারা উপজেলার ফয়জুল্লাহপুরে ১ কিলোমিটার, মসলেমপুরের দুটি পয়েন্টে ৫৫০ মিটার ও ৩৮০ মিটার এলাকায় পদ্মা নদীর ডানতীরে ভাঙন হচ্ছে। এসব পয়েন্টে নদী ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে কৃষকের আবাদি জমি। ভাঙছে তীরবর্তী রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি। সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে মানুষ। মসলেমপুরের রবিউল বলেন, নদী অনেক দূরে ছিল এখন ভাঙতে ভাঙতে আমাদের বাড়ির কাছে চলে এসেছে। এখনি প্রতিরোধ না করা গেলে আমরা ভিটেছাড়া হয়ে যাব।

পদ্মার প্রধান শাখা নদী গড়াইও ভেঙে চলেছে কুমারখালী ও খোকসা উপজেলার চারটি পয়েন্টে। কুমারখালী পৌর এলাকার কু ুপাড়ায় নদীর বাম তীরে ১০০ মিটার, সদকী ইউনিয়নের পাথরবাড়িয়ায় বাম তীরে ৫০ মিটার, খোকসা উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের হিজলাবট দ্বীপচর আদর্শ আশ্রায়ণ প্রকল্পে বামতীরে ৭০০ মিটার ও বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের জাগলবা, ভবানীপুর ও শ্যামপুরে বাম তীরে ১ দশমিক ২ কিলোমিটার অংশে ভাঙন তীব্র হয়েছে। বিশেষ করে ভূমিহীন পরিবার ও আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দারা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এখানকার বাসিন্দারা বলছেন, ঘর ভেঙে গেলে কোথায় থাকব?  দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

ভাঙনের এসব পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করে প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান। তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই অর্থ বরাদ্দ চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। দ্রুতই জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে।  পানি উন্নয়ন বোর্ড, পশ্চিমাঞ্চল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহজাহান সিরাজসহ পানি প্রকৌশলীরা বলেন, নদী তীরে ব্যবসায়ীদের জড়ো করে রাখা বালুর স্তূপ ভাঙন তীব্র করছে। এরই প্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য কামারুল আরেফিন নদী তীরে বালুর স্তূপ রাখা বন্ধ করার কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, পদ্মা নদীর ভাঙন প্রতিরোধে ইতোমধ্যে কুষ্টিয়ার তালবাড়িয়ায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের মেগা প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ঠিকাদারও নিয়োগ হয়েছে, বর্ষার পরেই শুরু হবে কাজ। পরের মৌসুম থেকে পদ্মা নদীর ডান তীরে আর ভাঙন হবে না।

সর্বশেষ খবর