শিরোনাম
রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

সমস্যা জর্জরিত বুড়িমারী স্থলবন্দর

আমদানিযোগ্য ১৮টি পণ্য সাময়িক বন্ধ নেই স্ক্যানার মেশিন

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

সমস্যা জর্জরিত বুড়িমারী স্থলবন্দর

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর নানা সমস্যায় জর্জরিত। ফলে আমদানি-রপ্তানিকারকরা এ স্থলবন্দর দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এতে সরকারের শুল্ক রাজস্ব দিন দিন কমে যাচ্ছে। বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর বুড়িমারী। এটি চারদেশীয় স্থলবন্দর। এ বন্দরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপালের বাণিজ্য। প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার পণ্যবোঝাই ট্রাক এ বন্দরে যাওয়া-আসা করে। অথচ এ বন্দরের সমস্যাগুলো দীর্ঘদিনেও দূর হয়নি। বুড়িমারী স্থলবন্দরের সমস্যার মধ্যে রয়েছে স্ক্যানার মেশিন না থাকা। এ বন্দরে প্রয়োজন ওয়্যারহাউস, ভারতের চ্যাংরাবান্ধা পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার রেললাইন সংস্কার ও পুনঃস্থাপন, ৫ কিলোমিটার রাস্তা ফোর লেনে উন্নীতকরণ, যাত্রী পারাপারের সুবিধার্থে আন্তর্জাতিক মানের বাস টার্মিনাল নির্মাণ, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে জেনারেটর বা বিদ্যুৎ গ্রিড সাব-স্টেশন নির্মাণ, বন্দরে ব্যাংকিং সেবা দিতে বুথের ব্যবস্থা। তারা বলছেন, বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রমিকদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এ বন্দরে পাথর ভাঙার কাজ করতে গিয়ে অনেক শ্রমিক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। বুড়িমারী স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত সুবিধার অজুহাত দেখিয়ে ইতিপূর্বে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ১৮৩/২০০৭ স্মারকে এ বন্দর দিয়ে আমদানিযোগ্য ১৮টি পণ্য সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া পণ্যগুলো হচ্ছে ডুপ্লেক্স বোর্ড, নিউজ পেপার, সুতা, রেডিও পার্টস, টিভি পার্টস, সাইকেল পার্টস, মিক্সড ফেব্রিক্স, ফেব্রিক্স, ফরমিকা সিট, সিরামিক ওয়্যার, স্যানিটারি ওয়্যার, স্টেইনলেস শিট ওয়্যার, মার্বেল পাথর, শুঁটকি মাছ প্রভৃতি। ব্যবসায়ীরা এ ১৮ আমদানি পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার দাবি করেছেন। বুড়িমারী স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশনে পণ্যবাহী গাড়ির জন্য স্ক্যানার মেশিন না থাকায় আমদানিকৃত পণ্যের গাড়িতে গোপনে একের পর এক অবৈধভাবে পণ্য দেশে প্রবেশ করছে। অসাধু কয়েকজন ব্যবসায়ীর দৌরাত্ম্যে নানামুখী সংকটে পড়েছে এ শুল্ক স্টেশন ও বন্দরটি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটান থেকে অধিকহারে পাথর আমদানি করা হয়। প্রতিদিন প্রায় ৪০০-৬০০ গাড়িতে পাথর ও অন্যান্য পণ্য আমদানি এবং রপ্তানি করা হয়। ঋণপত্র (এলসি) অনুযায়ী এসব গাড়িতে আনা পণ্যের সঠিকতা যাচাই করা হয় অনুমান করে। গুরুত্বপূর্ণ এ শুল্ক স্টেশনে ‘পণ্য স্ক্যানার’ না থাকার সুবাদে অসাধু ব্যবসায়ীরা আমদানি করা পণ্যের গাড়ির ভিতরে ভারতীয় শাড়ি, থ্রিপিস, কসমেটিক্স, গয়না, চিকিৎস সামগ্রী আনছেন। 

পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল জানান, দ্রুত সমস্যার সমাধান ও ১৮টি পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে এ বন্দরের রাজস্ব আয় প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে। বুড়িমারী স্থল শুল্ক স্টেশনের (কাস্টমস) সহকারী কমিশনার (এসি) নাজমুল হাসান বলেন, বুড়িমারী কাস্টমসে দায়িত্বরত সবাই কয়েক ধাপে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির গাড়িসমূহ চেক করে। গাড়িসহ পণ্য স্ক্যান করতে ‘স্ক্যানার’ বসাতে রংপুর কমিশনারের মাধ্যমে এনবিআরে চিঠি ও প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর