সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

ফের বিকট শব্দে কাঁপল টেকনাফ

কক্সবাজার প্রতিনিধি

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি ও সে দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে আবারও তুমুল লড়াই শুরু হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। টেকনাফ সীমান্তের ওপারে রাখাইন রাজ্যে রাতভর-দিনভর বিমান হামলা ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। অবিরত আসা গোলাগুলির বিকট শব্দে এপারের মানুষ আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। গত শনিবার (১৩ জুলাই) ও রবিবার (১৪ জুলাই) রাত-দিন বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তবর্তী মংডু শহরের আশপাশ থেকে ভারী গোলাবর্ষণের শব্দ পাওয়া গেছে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে সীমান্ত এলাকা।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর তুমুল লড়াই চলছে। রাজ্যটির অনেক এলাকা জান্তার হাতছাড়া হলেও তারা বিমান থেকে হামলা অব্যাহত রেখেছে। কিছুদিন বন্ধ থাকলেও গত কয়েক দিন ধরে হোয়াইক্যং, হ্নীলা, পৌরসভা, সদর, সাবরাং ও সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের সীমান্তে ভারী গোলার শব্দ শোনা যায়। শনিবার সন্ধ্যা থেকে বিস্ফোরণ হতে থাকে। গতকাল রবিবার এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সীমান্তের বাসিন্দারা বলছেন, রাতে বিমান হামলা ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দে তাদের বাড়িঘর কেঁপে ওঠে। শনিবার থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভারী গোলার শব্দ শোনা যায়। রাখাইনে বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় টেকনাফ সীমান্তের এপারের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। পাশাপাশি সীমান্ত দিয়ে আবারও অনুপ্রবেশের ঝুঁকি বেড়েছে। সীমান্তের মৌলবীপাড়ার বাসিন্দা ছিদ্দিক মিয়া বলেন, কী এক মহাবিপদে আছি। রাত হলে ঘুমাতে পারি না। দিনে বের হতে ভয় লাগে। মিয়ানমারে অবিরত গোলা বর্ষণ হচ্ছে।

সাবরাং ইউপি ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম বলেন, রাতে সীমান্তে ভারী গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। আমরা বিজিবির সহায়তায় সীমান্তের লোকজনকে জরুরি কাজ ছাড়া অযথা সীমান্তে ঘোরাঘুরি করতে নিষেধ করেছি। সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবুল ফয়েজ বলেন, এত ভয়ংকর শব্দ! এতদিন যত বিকট শব্দ ভেসে আসছে তার চেয়ে কয়েক গুণ ভারী শব্দ মনে হচ্ছে শনিবার থেকে। এ শব্দে ঘরবাড়ি পর্যন্ত নাড়া দিয়ে ওঠে। স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক দিনের পর দিন বাড়ছে।

টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী লালু মিয়া বলেন, রাতে তো আছেই! আজ (গতকাল) সকালেও অবিরত মিয়ানমারের বিস্ফোরণ ও গোলার বিকট শব্দ শোনা গেছে। আমরা খুব আতঙ্কে দিন পার করছি।

টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ বলেন, বিস্ফোরণের বিকট শব্দে ঘরবাড়ি পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাত তীব্রতর হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে যে কোনো অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর