মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

দুই বছর ধরে উধাও ঠিকাদার

ব্রিজের নির্মাণকাজ বন্ধ, দুর্ভোগে দুই ইউনিয়নের মানুষ

জমির বেগ, ফেনী

দুই বছর ধরে উধাও ঠিকাদার

ফেনীর সোনাগাজীর শকুনিয়া খালের ওপর ব্রিজের নির্মাণকাজের শুরুতে সেখানে থাকা কালভার্ট ভেঙে ফেলা হয়। এরপর পাইলিং করেই কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ওই কাজ দুই বছরের বেশি সময় ধরে  ওই অবস্থায় ফেলে রাখার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চরদরবেশ ও চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ২০ হাজারের বেশি মানুষ। উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রসুলপুর থেকে চরদরবেশ ইউনিয়নের ইতালি মার্কেট সড়কের খালের ওপর দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে প্রায় ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ব্রিজের কাজ ২০২২ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, বিকল্প সড়ক নির্মাণ না করেই আগের কালভার্টটি ভাঙা হয়। পরে সেখান দিয়ে চলাচলের জন্য স্থানীয়রা বাধ্য হয়ে বাঁশ দিয়ে একটি সাঁকো তৈরি করে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে ব্রিজটির কাজ বন্ধ থাকায় এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরেজমিন দেখা যায়, খালে পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। পশ্চিম পাশে সড়কের মাঝখানে সামান্য কিছু পাথর ছাড়া আর কিছু নাই। জানা যায়, কিছুদিন কাজ করার পর অজ্ঞাত কারণে ব্রিজের কাজ ফেলে উধাও হয়ে যান ওই ঠিকাদার। এরপর থেকে ব্রিজের নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে।  স্থানীয় আবুল কালাম নামে এক সমাজপতি বলেন, বাচ্চাদের স্কুল-মাদরাসা, আমাদের হাটবাজার সব ব্রিজের পূর্ব পাশে। আমরা অতিদ্রুত ব্রিজটির কাজ সম্পন্ন করতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কৃষক ছায়েদ উল্যাহ বলেন, আমাদের চাষের জমিগুলো ব্রিজের পশ্চিম পাশে। এ ব্রিজ না থাকায় জমি চাষাবাদ করে ফসল ঘরে আনা সম্ভব নয়। কীভাবে আনব সাঁকো দিয়ে নিজে পার হওয়া কষ্টের। চাষে ১০ টাকার জায়গায় খরচ হয় ১০০ টাকা। স্থানীয় মাদরাসার শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মামুন বলেন, এ ব্রিজটি না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুল-মাদরাসায় আসা যাওয়া করে। অনেক অভিভাবক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের স্কুল-মাদরাসায় পাঠায় না। এতে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ছিটকে পড়ছে ছেলে-মেয়েরা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. শাহাজাহান বলেন, রাস্তাটি চরচান্দিয়া ও চরদরবেশ ইউনিয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এ রাস্তা দিয়ে দৈনিক হাজার-হাজার মানুষের যাতায়াত ছিল। ২০২২ সালে পাইলিং করে ঠিকাদার চলে যান। এখন পর্যন্ত ওইভাবে ব্রিজটির কাজ পড়ে আছে। এলাকার মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। বিষয়টি আমাদের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সব স্তরের জনপ্রতিনিধিকে অবগত করেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। চরচান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন বলেন, এ ব্রিজের কাজ বন্ধ থাকায় স্থানীয়রা চরম ভোগান্তিতে আছে। তারা প্রতিনিয়তই আমাদের বিরক্ত করছেন। আমি বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মনোয়ার হোসেনের স্বত্বাধিকারী মনোয়ার হোসেন স্বপন বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী দীর্ঘ দিন অসুস্থ। এ কারণে কাজটি শেষ করা সম্ভব হয়নি। পাইলিংয়ের কাজ সম্পন্ন করেছি। এ বর্ষা শেষ হলে ব্রিজের কাজ আবার শুরু করব।

পিআইও ইকবাল হাসান বলেন, ঠিকাদারকে একাধিকবার এ বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি অতিদ্রুত ব্রিজটির নির্মাণকাজ শুরু হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর