শনিবার, ২০ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

১৬৫ চর-দ্বীপবাসীর ভরসা শুকনো মরিচের হাট

সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা

১৬৫ চর-দ্বীপবাসীর ভরসা শুকনো মরিচের হাট

হাটে লাল টুকটুকে শুকনো মরিচের সারি সারি বস্তা সাজানো। সূর্য ওঠার পরপরই হাটে আসতে থাকে বস্তায় বস্তায় মরিচ। গাইবান্ধার চার উপজেলার ১৬৫ চর-দ্বীপচর ও জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের বকশীগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি চর থেকে কৃষক ও পাইকাররা মরিচ বিক্রি করতে আসেন এ হাটে। নৌকা ও ঘোড়ার গাড়িতে এখানে মরিচ কেনাবেচা করতে আসেন কৃষক ও পাইকাররা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক। দরদাম মিটলেই বস্তা বোঝাই হয়ে ট্রাক ও ভটভটি যোগে চলে যায় দেশের বিভিন্ন জেলায়। এটি গাইবান্ধার ফুলছড়ির শুকনো মরিচের হাটের চিত্র। সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার বসে জেলার একমাত্র এ মরিচের হাট; যা ফুলছড়ির মরিচের হাট নামেই পরিচিত। জেলার এ উপজেলায় মরিচের চাষ বেশি হওয়ায় বেচাকেনার হাটটি ফুলছড়িতেই বসে। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত এখানে চলে বেচাকেনা। প্রতি হাটে মরিচ বিক্রি হয় কোটি টাকার বেশি। জানা গেছে, ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নে পুরাতন উপজেলা মাঠে ২০০৪ সাল থেকে এ মরিচের হাট বসে। দেশের বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধি যেমন প্রাণ, এসিআইসহ ঢাকা, বগুড়া, সান্তাহার, দিনাজপুর, জয়পুরহাট থেকে বিভিন্ন এলাকার পাইকার এসে এ হাট থেকে মরিচ কিনে নিয়ে যান। গাইবান্ধার শুকনো মরিচের কদর রয়েছে দেশব্যাপী। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনা নদীবেষ্টিত জেলার চার উপজেলার চর-দ্বীপচরের শত শত বিঘা জমিতে মরিচের ব্যাপক ফলন হয়। সাধারণত বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরই চরের পলিমাটিতে বীজ ছিটিয়ে দু-তিন বার নিড়ানি দিলেই বিনা সারে বিস্তর ফলন হয় মরিচের। মাটির গুণাগুণ ও আবহাওয়ার কারণে চরাঞ্চলের মরিচের রং সুন্দর ও আকার বড় হয়। এ কারণে বগুড়া, নওগাঁ, রংপুরসহ বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা ফুলছড়ি হাটে মরিচ কিনতে আসেন। তবে বেশি মরিচ কেনেন ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী নামিদামি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার চার উপজেলার ১৬৫ চর-দ্বীপচর ও জামালপুরের বকশীগঞ্জের কয়েকটি চর থেকে কৃষক ও পাইকাররা মরিচ বিক্রি করতে আসেন এ হাটে। লাল টুকটুকে মরিচে সাজানো বস্তায় কানায় কানায় ভরে উঠেছে হাট। ভোরে হাট শুরু হওয়ার কারণে দূরদূরান্ত থেকে মরিচ বিক্রি করতে আসা বিক্রেতা ও চাষিরা হাটবারের আগের রাতেই হাটে অবস্থান করেন।

সর্বশেষ খবর