শনিবার, ২০ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

রেলের কোয়ার্টারে নেশাখোরদের আড্ডা

গড়ে তোলা হয়েছে বসতবাড়ি, মার্কেট মাছের খামার

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

রেলের কোয়ার্টারে নেশাখোরদের আড্ডা

লালমনিরহাটে রেলওয়ে কোয়ার্টার -বাংলাদেশ প্রতিদিন

‘এক সময় আমার দাদা রেলওয়েতে চাকরি করতেন। সেই সুধাদে এই কোয়ার্টারটি আমি পেয়েছি।’ লালমনিরহাট শহরের সাহেবপাড়া এলাকার আলী আকবর ফকির এভাবেই বলছিলেন। রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলীয় লালমনিরহাট বিভাগের আওতাধীন রেলের কোয়ার্টারের অনেক ভবন রয়েছে নেশাখোরদের দখলে। সন্ধ্যা হলেই এসব পরিত্যক্ত ভবনে শুরু হয় তাদের আড্ডা, চলে গভীর রাত পর্যন্ত। ওইসব আবাসিক কোয়ার্টার এখন মাদক ব্যবসাসহ নানা অনৈতিক কাজেও ব্যবহার হচ্ছে। রেলের আবাসিক কোয়ার্টারগুলো শুধু অবৈধ দখলে নয়, তার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ। বেশির ভাগ কোয়ার্টারে নেই বিদ্যুতের মিটার। পৌর শহরের আনাচকানাচে বেশির ভাগ রেল কোয়ার্টারে মিটারবিহীন বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী মাসোহারা হিসেবে বিদ্যুতের লাইন সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শহরের সাহেবপাড়া, বাবুপাড়াসহ বেশির ভাগ কোয়ার্টারে রয়েছে মিটারবিহীন অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ। এ ছাড়াও অভিযোগ আছে, স্থানীয় প্রভাবশলীরা এসব কোয়ার্টার দখল করে গড়ে তুলছেন বসতবাড়ি, মার্কেট ও মাছের খামার। লালমনিরহাট থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী ট্রেনে যাত্রীসেবার মান নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ। লালমনিরহাট জেলা শহরের স্টেশন এলাকার বাসিন্দা মো. মফিজুল বলেন, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বেদখল হয়ে গেছে রেলওয়ের স্টাফ কোয়ার্টার। কেউ কেউ এসব সরকারি কোয়ার্টার দখল করে ভাড়াও দিয়েছেন। এ ছাড়াও দিনের পর খোলা জায়গায় থেকে নষ্ট হচ্ছে রেলওয়ের কোটি কোটি টাকার মালবাহী গাড়ি। লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার নুরুন্নবীর দেওয়া তথ্য মতে, প্রতিদিন লালমনিরহাট স্টেশন থেকে ১৪টি ট্রেন বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। এ ব্যাপারে নাম না প্রকাশে একাধিক স্থানীয় রেলওয়ে কর্মচারী বলেন, আবাসিক কোয়ার্টারগুলো অবৈধ দখলদারের হাত থেকে রক্ষা করে বিধ্বস্ত কোয়ার্টারগুলো মেরামতসহ নতুন ভবন নির্মাণ করে রেল কর্মচারীদের বরাদ্দ দিলে বাংলাদেশ রেলওয়ের আর্থিক ফান্ড বৃদ্ধি পাবে এবং সরকারের রাজস্ব বেড়ে যেত। রেল বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম স্বপন এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার মোহাম্মদ আবদুস সালাম বলেন, কিছুদিন আগেও রেলওয়ের জনবল তেমন না থাকায় কোয়ার্টারগুলো অবৈধ দখলে ছিল। এ ছাড়াও খোঁজ নিয়ে অবৈধ দখলদারের হাত থেকে কোয়ার্টাগুলো উদ্ধারসহ মেরামত করা হবে।

সর্বশেষ খবর