মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

খরার কবলে উত্তরের আমন আবাদ

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

উত্তরাঞ্চলের প্রধান ফসল রোপা আমন ধান খরার কবলে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ বছর ভরা বর্ষায় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমনের আবাদ নিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছে কৃষক। কিছুদিন ধরে খরতাপে পুড়ছে এ অঞ্চল। উঁচু জমিতে পানি না থাকায় বড় গৃহস্থরা সেচযন্ত্র বসিয়ে জমি তৈরি করে চারা রোপণ করলেও ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক বৃষ্টির অপেক্ষায়ই বসে আছে। খরার কবলে পড়তে পারে আশঙ্কায় সম্পূরক সেচ প্রদানে কৃষককে সেচযন্ত্র বসানোর পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

বর্ষা ঋতুর প্রথম মাস আষাঢ় বিদায় নিয়েছে। শ্রাবণেও নেই বারিধারা। এ অঞ্চলে সৃষ্ট খরায় পানির অভাবে উঁচু জমিতে লাগানো খেত শুকিয়ে গেছে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, রংপুর অঞ্চলের আট জেলায় তুলনামূলকভাবে এ বছর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম। উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় একই অবস্থা বিরাজ করছে।

১০ দিন ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে উল্লেখ করে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানায়, প্রচন্ড খরতাপ বিরাজ করছে রংপুর অঞ্চলে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আমন আবাদে।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষক নিচু জমিতে আমন চারা লাগাচ্ছে। তবে উঁচু ও মাঝারি জমিগুলো পানির অভাবে পড়ে আছে। আগে রোপণ করা খেতের চারা পানির অভাবে মরে যাচ্ছে। সচ্ছল কৃষক শ্যালো মেশিন চালিয়ে জমি তৈরি করছে। অনেকে স্থানীয় পদ্ধতিতে দোন, সেঁউতি কিংবা বালতি দিয়ে পানি সেচের মাধ্যমে চারা বাঁচানোর চেষ্টা করছে।

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার শিয়ালখোওয়া গ্রামের কৃষক আবদুল জব্বার ও দিলশাদ আলী সেচযন্ত্রের পানি দিয়ে জমি তৈরি করছিলেন। তাঁরা জানান, এ অঞ্চলের প্রধান ফসল আমন ধান এত দিন বৃষ্টিনির্ভর হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু এখন আবহাওয়ার বিপর্যয়ের কারণে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তাঁরা।

বৃষ্টির অভাবে চারা রোপণ করতে দেরি হওয়ায় এ উপজেলার তালুকশাখাতি গ্রামের কৃষক সাহানুর আক্ষেপ করে বলেন, ‘হামার কৃষকের একটেও ভালো নাই বাহে। আগাম ধান উৎপাদন করবার না পাইলে রবিফসলও (আলু, গম, শাকসবজি) দেরি হবে।’

সেচ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বিঘেœ আমন আবাদে তিস্তা ব্যারাজ কমান্ড এলাকায় ৬৫ হাজার হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সম্পূরক সেচ প্রদান শুরু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় ৬ হাজার, নীলফামারীর ডিমলায় ৭ হাজার, জলঢাকায় ৭ হাজার, কিশোরগঞ্জে ৫ হাজার, নীলফামারী সদরে ৩০ হাজার, রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ৫ হাজার হেক্টর।

সর্বশেষ খবর