বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

খাল ভরাটে জলাবদ্ধতা

রোকনুজ্জামান পারভেজ, শরীয়তপুর

খাল ভরাটে জলাবদ্ধতা

শরীয়তপুরে খাল দিয়ে নিষ্কাশন না হওয়ায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

শরীয়তপুরে খাল ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে বড় বড় দালান ও ব্যক্তিমালিকানাধীন অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই ওই এলাকায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। একই কারণে রবিশস্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জেলার প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর আবাদি জমি। শরীয়তপুর পৌরসভার পুকুর, খাল, বিল দখল হয়ে যাওয়াতে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় রাস্তা ঘাটে। এর ফলে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। দখলদারদের হাত থেকে খাল উদ্ধার করে পুনঃখননের দাবি এলাকাবাসীর। নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে কীর্তিনাশা নদী থেকে সংযুক্ত খালগুলো দখল করেছে প্রভাবশালী মহল। তোলা হচ্ছে দোকান ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। খালের ওপর স্থাপনা গড়ে তোলার ফলে শহরের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে যায়।

স্থানীয়রা জানান, পদ্মা মেঘনা বেষ্টিত শরীয়তপুর, যার চারপাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোটবড় অসংখ্য নদী। নৌযোগাযোগ কৃষিসমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্যে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল দিয়ে কাটা হয়েছিল নদীর সঙ্গে সংযোগ খাল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বার্থান্বেষী মহলের খাল ভরাটের কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এ কারণে দুই ফসলির আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না জেলার ৩০ হাজার হেক্টর আবাদি জমি। জেলার নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা, জাজিরা উপজেলাসহ সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি খাল বেদখল হয়ে গেছে। জেলার সদর উপজেলার আঙ্গারিয়া থেকে বুরিরহাট, রাজগঞ্জ থেকে আটং, নড়িয়া উপজেলার পদ্মার সুরেশ্বর পয়েন্ট থেকে বের হয়ে আসা ১০টি খালের নদীর সঙ্গে সংযোগ মুখ থাকলেও পণ্ডিতসার, চাকধ, মুলফৎগঞ্জ, নড়িয়া বাজারের পূর্বপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া চৌধুরী খালের অস্তিত্ব এখন আর চোখে পড়ে না। ভেদরগঞ্জ থেকে গোলার বাজার সংযোগ খালটির পাড় ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে দোকানঘর। এভাবে খালটি দখল করেছে প্রভাবশালী মহল। খাল দখলে সরকারি দপ্তরগুলোও পিছিয়ে নেই। সরকারি খাল দখল করে সড়ক জনপদ, গণপূর্ত বিভাগ নির্মাণ করেছে নিজস্ব দপ্তরে যাতায়াতের রাস্তা। কিছু দিন আগে খালটি খনন করলেও আবার দখল করা হয়েছে। এর ফলে খালটি সরু হয়ে গেছে। বিভিন্নভাবে খালগুলো দখল হয়ে যাওয়ায় নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ভারী পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে পোহাতে হচ্ছে নানা দুর্ভোগ। জমিতে পানি জমে থাকায় রবিশস্য আবাদ করা যায় না। জলাবদ্ধতার কারণে জমিতে একবারের বেশি ফসল ফলানো সম্ভব হয় না। আবার ইরি মৌসুমে খাল শুকিয়ে থাকে পানির জন্য ইরি ধান ফলাতে সমস্যা হয়। পৌর এলাকার মাহবুবুর রহমান তালুকদার বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অনেক ফসলি জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। জলাবদ্ধতার কারণে কোনো ফসল চাষ করতে পারে না। দ্রুত খাল উদ্ধারসহ ড্রেনেজের ব্যবস্থা করার প্রয়োজন। রাবার ড্রাম ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে ওইসব জমি দুই ফসলির আওতায় আনার পরিকল্পনার আশ্বাস দিলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা। দখল হয়ে যাওয়া খালগুলো উদ্ধার ও পুনঃখননের মাধ্যমে পানিপ্রবাহ সচল করার আশ্বাস দিলেন শরীয়তপুর জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রাশেদউজ্জামান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর