শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

চিত্রাহরিণের সংসারে নজর কাড়া ৯ নতুন অতিথি

ঐতিহাসিক রামসাগরের মিনি চিড়িয়াখানা

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

চিত্রাহরিণের সংসারে নজর কাড়া ৯ নতুন অতিথি

মধ্যযুগের বিখ্যাত সামন্ত রাজার অমর কীর্তি দিনাজপুরের রামসাগর। নয়নাভিরাম দীঘিটি পর্যটকদের মন ছুঁয়ে যায়। এখন এর সঙ্গে পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়ছে রামসাগরের মিনি চিড়িয়াখানার মায়াবী চিত্রাহরিণগুলো। গতকাল দিনাজপুরে কারফিউ সকাল ৬টা থেকে শিথিল হওয়ায় দর্শক-পর্যটকের ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে রামসাগর। ঘটে সব বয়সের নারী-পুরুষের সমাগম। এ বছর এ পর্যন্ত দিনাজপুরের চিত্রাহরিণের সংসারে এসেছে আরও ৯ নতুন অতিথি। এ নিয়ে এখানে চিত্রাহরিণের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৩-এ। শাবকদের নিয়ে মিষ্টি রোদের আলোয় বসে থাকে মা হরিণগুলো। এ দৃশ্য দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কাড়ছে। বাদাম বা খাওয়ার কিছু নিয়ে ডাকলে অনেক চিত্রাহরিণ ব্যারিকেড জালির কাছে ছুটে আসছে। এ সময় শাবকগুলো মাকে খুঁজে ফেরে। তবে কেউ শব্দ করলে তারা পালিয়েও যায়। সংশ্লিষ্টরা জানান, উপমহাদেশীয় হরিণ প্রজাতিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন চিত্রাহরিণ। চিত্রা বা চিত্রল থেকে এ হরিণের নামটি এসেছে। যার অর্থ ফোঁটা বা ছোপ যুক্ত। চিত্রাহরিণের দেহ লালচে বাদামি লোমযুক্ত চামড়া দ্বারা আবৃত, যাতে সাদা সাদা ফোঁটা দেখা যায়। গলার নিচে, পেট, লেজের নিচে ও চার পায়ের ভিতরের চামড়ার বর্ণ সাদা। হাঁটু থেকে পায়ের খুর অবধি হালকা সাদা বা ধূসর রং রয়েছে। এদের রেখা পিঠ দিয়ে লেজ পর্যন্ত চলে গেছে। মোসাদ্দেক হোসেন, আসাদুজ্জামান লিটনসহ কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, ঐতিহাসিক রামসাগরের জলরাশি জেলা প্রশাসন এবং বাকি অংশ বন বিভাগ দেখভাল করে। এখানে সেবার মান বাড়েনি। অথচ বন বিভাগকে জলরাশিসহ পুরোটা দিয়ে দিলে এখানে ঝুলন্ত সেতু, বিভিন্ন রাইডসহ পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে ও আধুনিকায়নে পদক্ষেপ নিতে পারে। এসব আধুনিকায়ন করা গেলে এটি হতে পারে উত্তরাঞ্চলের পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান। পাশাপাশি সরকারের রাজস্বও বাড়বে। চিত্রাহরিণের প্রিয় খাবার শাপলাপাতা। রামসাগর দিঘিতে শাপলা চাষ করতে পারলে হরিণের খাদ্য চাহিদা কিছুটা মেটানো সম্ভব হবে। কিন্তু দিঘিতে মাছ শিকার, ইঞ্জিন নৌকা চালানোর কারণে শাপলা চাষ বন্ধ হয়ে যায়। তবে রামসাগর দিঘিতে শাপলা চাষ করা গেলেই খাবারের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব বলেন হরিণগুলো তদারককারী বাবুল। দিনাজপুর রামসাগর জাতীয় উদ্যানের তত্ত্বাবধায়ক ও বনবিট কর্মকর্তা আবদুল মান্নান জানান, রামসাগর জাতীয় উদ্যানের মিনি চিড়িয়াখানায় সরকারিভাবে ছয়টি চিত্রাহরিণ আনা হয়। বংশবিস্তারের পর এখন এদের সংখ্যা ৯৩টি। দিনদিন এখানে হরিণের সংখ্যা বাড়ছে। মিনি চিড়িয়াখানায় দৃষ্টিনন্দন চিত্রাহরিণ ছাড়াও অজগর, পাখি, বানরসহ কিছু প্রাণী রয়েছে যা পর্যটকদের মুগ্ধ করে।

সর্বশেষ খবর