সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

নড়বড়ে সাঁকোয় পারাপার

ঝুঁকি নিয়ে বুড়িখোড়া নদী পার হন নীলফামারীর তিন উপজেলার মানুষ

আবদুল বারী, নীলফামারী

নড়বড়ে সাঁকোয় পারাপার

নীলফামারীর তিন উপজেলার মানুষের নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে ঝুঁঁকি নিয়ে চলাচল করে হাজার হাজার মানুষ। সদর উপজেলার বুড়িখোড়া নদীর ওপর বসুনিয়ারডাঙ্গা গ্রামে সাঁকোটি অবস্থিত। নীলফামারী সদর, জলঢাকা ও ডোমারের কয়েকটি গ্রামের মানুষ উপজেলা শহরে যাতায়াত করেন বুড়িখোড়া নদী পার হয়ে। সরেজমিনে দেখা যায়, জরাজীর্ণ সাঁকো দিয়ে বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল নিয়ে হেঁটে পার হচ্ছেন অনেকে। শিক্ষার্থীরা যাচ্ছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সাবধানে চলাচল করছেন সবাই। একটু অন্যমনস্ক হলে যে কোনো সময় নদীতে পড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় জংলীপাড়ার বাসিন্দা বিমল চন্দ্র রায় বলেন, শুকনা মৌসুমে সাঁকো দিয়ে কোনোভাবে নদী পারাপার সম্ভব। বর্ষাকালে নদী পানিতে ভরা থাকায় চলাচল করতে হয় ঝুঁকি নিয়ে। এই স্থানে একটি সেতুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী বিভিন্ন দপ্তরে ধরনা দিলেও সুফল মেলেনি।

ললিত চন্দ্র রায় বলেন, গত বছর আমার ছেলে সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়। আমরা অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করি। কৃষিপণ্যও পারাপার করতে হয় এ সাঁকো দিয়ে। নবিজুল ইসলাম নামে একজন জানান, বর্ষার সময় সাঁকো পার হওয়া অনেক কষ্টের। বহু বছর ধরে শুনি, এখানে সেতু হবে। এখনো সেতু হলো না। আর হবে কি না, সেটাও জানি না। বসুনিয়ারডাঙ্গা গ্রামের ধীরেন্দ্র নাথ রায় বলেন, প্রতিবার ভোটের সময় ওই ঘাটে পাকা সেতু নির্মাণের বিষয়টি ওঠে। ভোট শেষে জনপ্রতিনিধিদের দেখা মেলে না।

মোটরসাইকেল আরোহী সাদেক আনোয়ার বলেন, আমার বাসা নদীর ওই পাড়ে। আমাকে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। অনেক সময় মোটরসাইকেল নিয়ে পার হওয়া যায় না। ছেলেমেয়েরা বর্ষা মৌসুমে স্কুলে যেতে পারে না। সেতুর অভাবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয় রোগীদের।

কাচারি উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিতা রানী রায় জানায়, কষ্ট করে সাঁকোর ওপর দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। অনেক সময় পানিতে পড়ে আমাদের বইখাতা নষ্ট হয়ে যায়। লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, প্রতিদিন এই সাঁকোর ওপর দিয়ে হাজার হাজার লোক যাতায়াত করেন। সেতু নির্মাণের বিষয়ে আমি এলজিইডি অফিসে অনেকবার যোগাযোগ করেছি। এখানে সেতু হলে মানুষের যাতায়াতের সুবিধার পাশাপাশি জীবনযাত্রার মান বাড়বে। নীলফামারী স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ কবির বলেন, একটি প্রকল্প তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। ওই স্থানে একটি সেতু করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। আশা করি খুব দ্রুত হয়ে যাবে।

সর্বশেষ খবর