মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

কোটি টাকা হাতিয়ে গা ঢাকা দিলেন মাদরাসা কমিটির সদস্য

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

চাকরি প্রার্থীদের প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছেন মানসুরাবাদ আলীম মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য কবির সুলতান। পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জের ঘটকের আন্দুয়া গ্রামের আমজেদ জোমাদ্দারের ছেলে কবির সুলতান সুন্দ্রা কালিকাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কেরানি ছিলেন। মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটিতে ঢোকার পর নিয়োগবাণিজ্য শুরু করেন। মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এবং কম্পিউটার অপারেটর, অফিস সহায়কসহ আটজন লোক নিয়োগ দেওয়া হবে - এরকম একটি বিজ্ঞপ্তি স্থানীয় এক দৈনিকে ছাপা হয়। কবির সুলতান এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়েই বিভিন্ন জনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। মাহবুবুর রহমান নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, আমাকে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন জনকে ম্যানেজ করতে ৭ লাখ টাকা দাবি করেন। কবির সুলতান অগ্রীম বাবদ ৪ লাখ টাকা চাইলে স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যানকে সাক্ষী রেখে তাকে ৪ লাখ টাকা দিয়েছি। বলেছেন ১৫ দিনের মধ্যে চাকরি হবে। কিন্তু ৩ মাস পার হলেও চাকরি হয় না। জানতে পারি তিনি অন্য একজনের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা নিয়ে তাকে চাকরি দিয়েছেন। তিনি টাকা হাতানোর মতলবে মানসুরাবাদ আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ ও সভাপতি জুয়েল বেপারীর নাম ভাঙিয়েছেন। বলেন, আমরা এর কোনো কিছুই জানি না। কেউ যদি আমাদের নাম ব্যবহার করে থাকে তা হীন স্বার্থেই করেছে। তবে ভুক্তভোগী সূত্রে জানতে পেরেছি, কবির সুলতান বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে মাদরাসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা দুজন বলেন, আমাদের নামে কবির সুলতান মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন। প্রতারণার বিষয়টি পরিষ্কার হয় যখন ভুক্তভোগী একজন উপস্থিতিতেই সালিশ বৈঠকে ভাজনা কদমতলার আলমগীর সিকদারের কাছ থেকে নেওয়া ৬ লাখ টাকার বিষয় সামনে আসে। আলমগীর সিকদারের দেওয়া ৬ লাখ টাকার বিপরীতে ৩ লাখ টাকার ৮/২/২০২৪ তারিখের অগ্রণী ব্যাংক সুবিদখালী শাখার একটি চেক দেন। আর বাকি ৩ লাখ লাখ টাকা ১০ দিনের মধ্যে নগদ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই সালিশ মীমাংসার পর থেকেই লাপাত্তা কবির সুলতান। আলমগীর সিকদার চেকের টাকা তুলতে গেলে জানতে পারেন ব্যাংকে টাকা নেই। তাই তিনি গত ২১ মে মির্জাগঞ্জ উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। আলমগীর সিকদারের টাকা কবির সুলতান তো ফেরত দেনইনি উল্টো তাকে হয়রানি করার জন্য তার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা ঠুকেছেন।      কবির সুলতান শুধু চাকরির নামে প্রতারণা করেছেন এমন নয়। সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর থেকে মাদরাসার এতিমদের নামে বরাদ্দকৃত কেপিটেশনের প্রায় ৫ লাখ টাকাও কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে কবির সুলতানকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

সর্বশেষ খবর