শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

পোশাক শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

বকেয়া বেতন দাবি : যানজট, দুর্ভোগে যাত্রী পরিবহন শ্রমিক

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

পোশাক শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বকেয়া বেতনসহ বিভিন্ন দাবিতে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা গতকাল ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ রেখে বিক্ষোভ করে। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজট সৃষ্টি হয়। চরম দুর্ভোগে পড়েন পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলে শ্রমিকরা কারখানায় যায়। কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় নায়াগ্রা ট্রেক্সটাইল লিমিটেড নামে তৈরি পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী, পরিবহন শ্রমিক-যাত্রী ও কারখানার শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, ওই কারখানার স্টাফদের পাঁচ মাসের ও শ্রমিকদের এক মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। এ ছাড়াও তাদের ছুটির টাকা, রিজাইনের টাকা, মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকাও দেওয়া হচ্ছে না। কয়েকবার সময় দিয়েও তাদের পাওনাদি পরিশোধ করছেন না মালিকপক্ষ। মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওই কারখানার শ্রমিকরা। বকেয়া বেতনসহ বিভিন্ন দাবিতে সোমবার থেকে শ্রমিকরা ওই কারখানায় কর্মবিরতি পালন করে আসছে। কিন্তু শ্রমিকদের সঙ্গে কোনো কথা না বলে হঠাৎ করেই কারখানা থেকে চলে যান মালিক পক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ করেন। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল সকালেও শ্রমিকরা তাদের কর্মস্থল ওই কারখানার ভিতরে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি পালন করে। কিন্তু মালিক পক্ষের কাউকে না পেয়ে শ্রমিকরা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা। ওই মহাসড়ক অবরোধ রেখে বিক্ষোভ করলে উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে তাদের শান্ত হয়ে কারখানার ভিতরে গিয়ে কর্মবিরতি পালন করে। এরপর ধীরে ধীরে ওই মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহম্মেদ ও কালিয়াকৈর পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান ওই কারখানায় পরিদর্শনে যান। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌর মেয়র ও সেনা কর্মকর্তার সমন্বয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। এ সময় সমস্যা সমাধানের জন্য বিকালের মধ্যে কারখানায় আসার কথা জানিয়েছেন মালিক পক্ষ। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, আমাদের নাম প্রকাশ করলে পরে খুঁজে খুঁজে কারখানা থেকে বের করে দেবে মালিকপক্ষ। কিন্তু স্টাফদের পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া, শ্রমিকদের এক মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। এ ছাড়াও তাদের ছুটির টাকা, রিজাইনের টাকা, মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকাও দেওয়া হচ্ছে না। গত ৩১ জুলাই, ১৪ আগস্ট ও ২৫ আগস্ট আমাদের পাওনা টাকা পরিশোধের কথা দিয়েছিল মালিক পক্ষ। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনো কথা না বলে হঠাৎ করেই মালিক পক্ষ কারখানা থেকে চলে যায়। এদিকে আমাদের বকেয়া টাকা না দেওয়ায় বাসা ভাড়া, দোকানের বিল বাকি পড়েছে।

কালিয়াকৈর পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান জানান, খবর পেয়ে আমরা ওই কারখানায় পরিদর্শনে যাই। শ্রমিক ও মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আজকের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধের কথা বলেছি। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা দিয়েছেন কারখানায় এসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহম্মেদ জানান, ওই কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান করলে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করলেও কোনো যানবাহনে ভাঙচুর করেনি। তবে মালিক পক্ষকে অতিদ্রুত শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের কথা বলা হয়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর