শিরোনাম
শুক্রবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

নদীভাঙনে নিঃস্ব শত শত পরিবার

খন্দকার একরামুল হক সম্রাট, কুড়িগ্রাম

নদীভাঙনে নিঃস্ব শত শত পরিবার

কুড়িগ্রামে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বেড়েছে নদ-নদীর ভাঙন। এতে গৃহহীন হয়ে পড়ছে শত শত পরিবার। নদীভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব গৃহহারা পরিবারগুলো অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, ধরলা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বসতবাড়ি, ফসলি জমি এবং বিভিন্ন স্থাপনা প্রতিদিনই বিলীন হচ্ছে। এ ছাড়াও বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটি ক্লিনিকও রয়েছে ভাঙনের ঝুঁকিতে। এসব এলাকার মানুষের দাবি নদীভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থার পাশাপাশি স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ।

স্থানীয়রা জানায়, জেলার চিলমারী উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের কড়াই বরিশাল গ্রামের বাসিন্দা মিনারা বেগম বসতভিটে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, এ এলাকায় নদীভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পানি কমা ও বাড়ার ফলে এটি বাড়ে। ব্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে শেষ সম্বলটুকু রক্ষা করতে ব্যস্ত তার মতো আরও ১০-১২টি পরিবার। ভাঙনের মুখে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন অন্যত্র। শুধু চিলমারী নয়, জেলার উলিপুর, রৌমারী, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী, ফুলবাড়ী, রাজারহাট এবং সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে এখন তীব্র নদীভাঙন চলছে। এতে শত শত পরিবার গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে বাস করছে। বসতবাড়ি ফসলি জমি এবং গাছপালাসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে বিলীন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের হকের চরের শাহাবুদ্দিন ও হাজেরা বেওয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে এই চরে থাকি। ২০১৯ সালে সরকার গুচ্ছগ্রামে ঘর করে দিলেও সব ঘর সব নদী খায়া নিয়েছে। এলা মাথা গোঁজার ঠাঁই নাই হামার।’ এখন তারা যাচ্ছেন দক্ষিণে চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের এক চরে। তাদের দাবি, সরকার যেন দ্রুততম সময়ে নতুন আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেন। সাহেবের আলগা ইউপির চেয়ারম্যান মোজ্জাফর হোসেন বলেন, গেল বন্যায় তার ইউনিয়নে ২ শতাধিক পরিবার নদীভাঙনের শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছে। এর মধ্যে হকের চরেই রয়েছে ৯০টি পরিবার। দক্ষিণ নামাজের চরে ৪৭ পরিবার ও দৈ খাওয়ার চরে ৬০ পরিবার নদীভাঙনের শিকার হয়েছেন। তিনি আরও জানান, এই ইউনিয়নে ৬ হাজার ৫০০ পরিবারের মধ্যে ৫০০ পরিবার সচ্ছল। অবশিষ্ট মানুষ অত্যন্ত দরিদ্র শ্রেণির। নদীভাঙন হলে তাদের সহায়তা প্রয়োজন।

চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, শুধু ঘরবাড়ি নয়, নদনদীর ভাঙনে শত শত একর কৃষিজমিও বিলীন হয়ে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে বরাদ্দ না পাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে উত্তরের অবহেলিত এই জনপদের মানুষকে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, নদীভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জরুরিভিত্তিতে বিভিন্ন এলাকায় কাজ শুরু করা হয়েছে।

পাশাপাশি ব্রহ্মপুত্র নদের তীর রক্ষা প্রকল্পসহ বেশ কিছু প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ভাঙন রোধে স্থায়ী কাজ শুরু করা হবে।

সর্বশেষ খবর