বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

বকেয়া বেতন দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কে তীব্র যানজট দুর্ভোগে যাত্রী-পরিবহন শ্রমিকরা

গাজীপুর ও কালিয়াকৈর প্রতিনিধি

বকেয়া বেতন দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

বকেয়া বেতন দাবিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকা ও কালিয়াকৈরে গতকাল মহাসড়ক অবরোধ করে তিনটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গতকাল মহাসড়ক অবরোধ করেন মাহমুদ জিন্স কারখানার শ্রমিকরা। উপজেলার খাড়াজোড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কের উভয়পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম দুর্ভোগে পড়েন পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা। অবরোধে প্রায় চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক চালু করে সেনাবাহিনী। এলাকাবাসী, পরিবহন শ্রমিক-যাত্রী ও কারখানার শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, খাড়াজোড়া এলাকার মাহমুদ জিন্স কারখানার শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। কয়েকবার সময় দিয়েও তাদের পাওনাদি পরিশোধ করেননি মালিকপক্ষ। বেতনের টাকা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওই কারখানার শ্রমিকরা। প্রতিদিনের মতো গতকাল সকালে কারখানায় যান ওই পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। তারা কাজে যোগদান না করে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ভিতরে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করেন। কিন্তু মালিক পক্ষের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা-নবীনগর দুটি মহাসড়কের উভয়পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম দুর্ভোগে পড়েন পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা। খবর পেয়ে শিল্পপুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে শ্রমিকরা আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এরপর খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। অবরোধে প্রায় চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর বিকাল চারটার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক চালু করল সেনাবাহিনী। পরে ধীরে ধীরে ওই দুটি মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের দাবি, তিন মাস তাদের বেতন দেওয়া হচ্ছে না। কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন দেই দিচ্ছি করে টালবাহানা করছেন। এদিকে আমাদের বকেয়া টাকা না দেওয়ায় বাসা ভাড়া, দোকানের বিল বাকি পড়েছে। এছাড়া আমরা টাকার অভাবে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসারের চাহিদা মিটাতে পারছি না। এখন আমাদের মাবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। অতিদ্রুত বকেয়া পাওনাদি পরিশোধ করে আমাদের সুন্দরভাবে জীবনযাপনের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

গাজীপুর-২-এর শিল্প পুলিশের ওসি নিতাই চন্দ্র সরকার জানান, শ্রমিকদের অবরোধের কারণে দুটি মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে শ্রমিকদের বেতনের সমস্যা সমাধান করা হবে। কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম জানান, খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এখন মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

এদিকে একই দাবিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মালেকের বাড়ি এলাকায় টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার সড়কের একপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ঢাকাগামী ও ময়মনসিংহগামী যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। শ্রমিকরা জানায়, টিএনজেড গ্রুপে ৩ হাজার ৩০০ শ্রমিক কাজ করেন। এ ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের জুলাই মাসের বেতন মঙ্গলবার পরিশোধ করার কথা থাকলেও তাদের বেতন পরিশোধ না হওয়ায় তারা আন্দোলন করেন।

এ ছাড়া বুধবার সকাল ১০টার দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর থানার জিরানি এলাকার বেঙ্গল পলিমার ওয়্যার লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা জুলাই মাসের বেতনের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন।

সর্বশেষ খবর