দেশের বন্যাদুর্গতদের সহায়তার জন্য বরিশাল নগরী থেকে অর্থ সংগ্রহ করছে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ, মন্দিরের পূজারী, পুরোহিত ও আলেম সমাজ। দুর্গোৎসব আয়োজনের বাজেট থেকে অর্থ সহায়তা পাঠিয়েছে বরিশালের বেশ কয়েকটি মন্দির কমিটি। আরও কয়েকটি মন্দির কমিটি সহায়তা পাঠাতে তহবিল প্রস্তুত করেছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক বিএম কলেজ শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার থেকে তারা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে সহায়তার জন্য অর্থ উত্তোলন করেছেন। গতকাল তারা ১২টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে নগরীর ৭০টির বেশি মসজিদের সামনে অবস্থান নিয়ে চাঁদা সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে বরিশাল থেকে তিন সদস্য করে একটি শিক্ষার্থী দল কুমিল্লা ও ফেনীতে অবস্থান করছেন। তারা খাবার সামগ্রী নিয়ে গেছেন। বর্তমানে সংগ্রহ করা অর্থ বেশি হলে শিক্ষার্থীরা খাবার সামগ্রী নিয়ে দুর্গত স্থানে যাবে। অর্থের পরিমাণ কম হলে ঢাকায় গিয়ে জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কদের সঙ্গে পরামর্শ করে সহায়তা পাঠানো হবে।
ইসলামী যুব আন্দোলনের জেলার সভাপতি মো. সানাউল্ল্যাহ জানান, চরমোনাই মাদরাসার শিক্ষার্থী ও ইসলামী আন্দোলনের সদস্যরা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ের সব মসজিদ ও বাজার থেকে দান সংগ্রহ করছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে দুর্গত এলাকায় পৃথক তিনটি টিম পাঠিয়েছে। বরিশাল থেকে উত্তোলন করা টাকা তাদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। গতকাল জুমার নামাজের পর নগরীর সফি মিয়ার গ্যারেজ জামে মসজিদে খুতবার আগে বন্যাদুর্গতদের জন্য সহায়তা উত্তোলন করেন ইমাম মো. আল-আমিন। তিনি জানান, বন্যাদুর্গতদের জন্য সহায়তার অর্থ তাদের নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে দুর্গত এলাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। নগরীর শংকর মঠ পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আকাশ দাস জানান, ফেনী, কুমিল্লাসহ ১১টি জেলায় বন্যায় মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। আমাদের শংকর মঠের পক্ষ থেকে দুর্গোৎসবের জন্য যে বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছিল তার বড় একটি অংশ বন্যাদুর্গতদের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেখানে মন্দিরের পক্ষ থেকে ছয় সদস্যের একটি স্বেচ্ছাসেবী টিমও গেছে। আরও কয়েকটি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে প্রায় ২০ হাজার টাকার বেশি পাঠানো হয়েছে। আমরা আরও কিছু কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং সবার প্রতি আহ্বান রেখেছি দুর্গত এলাকার মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য। নগরীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণারঞ্জন চক্রবর্তীর স্মৃতি দুর্গামন্দিরের সাধারণ সম্পাদক অয়ন চক্রবর্তী বলেন, দুর্গাপূজায় আলোকসজ্জা, ভালো পোশাক ক্রয়, সাউন্ড সিস্টেমের পেছনে অর্থব্যয় বাধ্যতামূলক নয়। ধর্মীয় যে রীতি রয়েছে সেটি পালন করাই যথেষ্ট। এ জন্য আমাদের মন্দিরের পক্ষ থেকে ঐচ্ছিক ব্যয় করার জন্য যা বাজেট ছিল তা বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের জন্য আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পাঠিয়েছি। আরও তহবিল সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি বন্যাক্রান্ত এলাকায় সহায়তার জন্য পাঠাতে।