বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

দুই বছরেও চালু হয়নি আইসিইউ

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

দুই বছরেও চালু হয়নি আইসিইউ

জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের অব্যবহৃত আইসিইউ ইউনিট - বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও চালু হয়নি জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ)। দুই বছর ধরে চালুর অপেক্ষায় আছে এটি। শুধু জনবল সংকটে হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ এ বিভাগের সেবা থেকে বঞ্চিত আছেন জয়পুরহাটবাসী এমন দাবি কর্তৃপক্ষের।

জানা গেছে, করোনার সময় দেশে আইসিইউ সংকটের উপলব্ধি থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে হাসপাতালটির পুরনো ভবনের চার তলার একটি বড় কক্ষে ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিট প্রস্তুত করা হয়। এতে ব্যয় হয় প্রায় দেড়কোটি টাকা। সহযোগিতা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, গণপূর্তবিভাগ, জেলা পরিষদ এবং স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা। ইউনিটটির যাবতীয় ইন্সট্রুমেন্টও উন্নত মানের। দ্রুত চালুর জন্য হাসপাতালের পক্ষ থেকে ১৬ জন সিস্টারকে ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইউনিটটি ২৪ ঘণ্টা চালু রাখার জন্য প্রয়োজন ছয়জন অবেদনবিদ (এনেস্থেসিওলজিস্ট), ১০ জন ওয়ার্ডবয় ও আয়া। কিন্তু হাসপাতালে আছেন মাত্র একজন অবেদনবিদ চিকিৎসক। ফলে সব যন্ত্রপাতি এবং প্রয়োজনীয় ১৬ জন সিস্টারের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার পরও চিকিৎসক ও ওয়ার্ডবয় সংকটে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মুমূর্ষু রোগীদের কোনো কাজে লাগছে না অতি গুরুত্বপূর্ণ এ আইসিইউ ইউনিট।

জয়পুরহাট শহরের তাজুর মোড় থেকে বাবা রামনাথ দাসকে হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করার জন্য এসেছেন মানিক দাস। তিনি বলেন, আগে ডায়ালাইসিসও হতো না এ হাসপাতালে। এখন হচ্ছে। হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিট চালু হওয়ার কথা শুনে আসছি দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু সেটি চালু হচ্ছে না। ইউনিটটি চালু হলে আমাদের মতো নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের রোগীদের উপকার হতো। অর্থ এবং সময় দুটোই সাশ্রয় হতো। আইসিইউ ইউনিট দীর্ঘদিনেও চালু না হওয়ায় গরিব মানুষদের খুবই কষ্ট হচ্ছে; জানালেন পাঁচবিবির পাঁচগাছির গৃহবধূ জেসমিন আক্তার। তিনি বলেন, তার স্বামী জিএম আলী কিডনি রোগী। দুই বছর ধরে এ হাসপাতালে সপ্তাহে দুই দিন ডায়ালাইসিস করার জন্য আসতে হয়। অনেক সময় আইসিইউ প্রয়োজন হয়। তখন বগুড়ায় যেতে হয়। এ ধরনের রোগী বহন করতে অনেক সময় পথেই মৃত্যু ঘটে। আমরা চাই ইউনিটটি চালু করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আইসিইউ ইউনিটের ইনচার্জ আবদুল্লাহ রানা বলেন, হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটটি চালু না হওয়ায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা মুমূর্ষু রোগীদের সেবা দিতে পারছি না।  হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার রাশেদ মোবারক জুয়েল বলেন, করোনার সময়ই আইসিইউ ইউনিটের প্রয়োজন উপলব্ধি করেছি। ফলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ১০ বেডের আইসিইউ ইউনিট প্রস্তুত করেছি। ১৬ জন নার্সকে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। শুধু ছয়জন অবেদনবিদ চিকিৎসক এবং ১০ জন ওয়ার্ডবয় ও আয়া হলেই ইউনিটটি চালু করা সম্ভব। বিষয়টি লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে।

সর্বশেষ খবর