ঝিনাইদহ পৌরসভার অভ্যন্তরে বিস্ময়কর কাজকর্ম করে মানুষের মুখে মুখে চলছে তীর্যক কথাবার্তা। যেমন দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করতে থাকা হাবিব নামে এক ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হয়Ñ পদে ছোট ওজনে বড়। তাই সবাই তার ভয়ে তটস্থ। জানা গেছে, হাবিবুর রহমান হাবিব। টানা ৪২ বছর কার্র্যসহকারীর পদে রয়েছেন। পুরো পৌরসভা এখন হাবিবের কবজায়। রটনা আছেÑ মেয়র পদে যেই আসুক হাবিব নামে টাকা কামানোর মেশিনের কাছে সবাই ধরা। হাবিব প্রতিটি মেয়রের কাছেই আস্থাভাজন ও ক্ষমতাধর হয়ে ওঠেন। তার কথার বাইরে পৌরসভার কোনো কাজ হয় না। হাবিবের আচরণ মেয়রের মতোই। পৌরসভার কর্মচারী এমনকি কর্মকর্তারাও তটস্থ তার ভয়ে। জমি জরিপ শাখায় চাকরি করলেও সবাইকে ম্যানেজের কারণে দায়িত্বপ্রাপ্ত জরিপ সহকারীর পদে রয়েছেন। জরিপ শাখায় তার মতের বাইরে কোনো কাজ স্বাধীনভাবে কর্মচারীরা করতে পারে না। অভিযোগ উঠেছে, বাড়ির নকশা তৈরির কাজটা সব সময় পায় মাসুদ কনস্ট্রাকশন্স। এ ফার্মের মালিক নাসিমা খাতুন হলেন হাবিবের স্ত্রী। মাসুদ কনস্ট্রকশন্স ছাড়া অন্য কোনো ফার্ম হাউস থেকে প্ল্যান পাস হতে দেওয়া হয় না। এমনকি অন্য জায়গা থেকে প্ল্যান করলে অনুমোদনের জন্য দিনের পর দিন ঘোরাঘুরি করতে হয়। এসব করে কার্যসহকারী হাবিব নামে-বেনামে গড়েছেন অঢেল সম্পত্তি। শহরের বিভিন্ন স্থানে জমি আর আলিশান বাড়ি। চাকচিক্য ও বিত্তবৈভবের কমতি নেই তার। জমির আপত্তি-নিষ্পত্তি, বিচার-শালিস হাবিব ছাড়া অচল। এ ছাড়া হাবিবের রয়েছে দোকান বরাদ্দের একক ক্ষমতা। তিলকে তাল আর নয়কে ছয় বানানের কৌশল জানা রয়েছে হাবিবের। অভিযোগ রয়েছে পৌরসভার সচিব ও নির্র্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগসাজশ করে ঠিকাদারি কাজেও গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট। শুধু এসব করেই ক্ষ্যান্ত থাকেনি হাবিব। ঝিনাইদহ পৌরসভার অবৈধ আয়ের আদায়কারী দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অভিযানে পৌরসভার অবৈধ মার্কেট উচ্ছেদ হওয়ার পর হাবিবের ব্যবসার ব্যাপারটি ফাঁস হয়।
দোকান মালিকদের কাছ থেকে ৩০০ টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি করে লাখ লাখ টাকা আদায় করেছেন কার্যসহকারী হাবিব। কিন্তু এই টাকা পৌরসভার ফান্ডে জমা হয়নি। হাবিবুর রহমান তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দোকান বরাদ্দের টাকা দিয়ে ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। সে কারণে এই টাকা পৌরসভার ফান্ডে নেই। তার দাবি, তার যা আছে সবই বৈধ সম্পত্তি। স্ত্রীর নামে ঠিকাদারি ফার্ম আছে স্বীকার করে তিনি বলেন, শহরে আরও ১৮/১৯টি ফার্ম রয়েছে। সেখান থেকে কেউ নিয়মের ভিতরে থাকলে তা গ্রহণ করা হয়। পৌরসভায় সিন্ডিকেট ও ঘুষ দুর্নীতির বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন।