শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

পাউবোর ৬৪ কোটি টাকা নদীতে ভাঙন রোখার চেষ্টা বিফল

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

পাউবোর ৬৪ কোটি টাকা নদীতে ভাঙন রোখার চেষ্টা বিফল

নদী ভাঙন রুখতে মৌলভীবাজারে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ৫ বছরে যে ৬৪ কোটি টাকা ব্যয় করেছিল তাতে কোন ফলোদয় ঘটেনি। ৪টি নদীতে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে ওই চেষ্টা করা হয় যা জেলাবাসীর কোনো কাজেই আসছে না। বরং বিভিন্ন জায়গায় ইমার্জেন্সি বরাদ্দের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা লোপাট করা হয়েছে। এমন অভিযোগ ছিল আওয়ামীলীগ নামধারী ঠিকাদার ও স্থানীয় পাউবোর কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এদিকে জেলাবাসিকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে জেলার প্রধান নদী মনু নদীতে ২০২১ সালে ৯’শ ৯৬ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মেগা প্রকল্প নেয়া হলেও এ প্রকল্পও আলোর মুখ দেখেনি। ২০২৩ সালের জুনে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। দ্বিতীয় দাপে ২০২৬ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ৪৭ শতাংশ। কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে বিভিন্ন মহলে। অনিয়ম বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে দুদক ও পাউবো কর্তৃপক্ষ তদন্ত করেন। মৌলভীবাজার পাউবো সূত্র জানায়, জেলার ৪টি নদীতে বিগত ৫ বছরে বিভিন্ন জায়গায় ইমার্জেন্সি বরাদ্দ দেয়া হয় ১৮ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে মনু নদীতে ১১ কোটি ৮৮ লক্ষ ৩২ হাজার, ধলাই নদীতে ৬ কোটি ৭ লক্ষ ৭৮ হাজার ও জুড়ি নদীতে ৫৯ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা। এদিকে ৬৪টি জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় প্রকল্প (১ম পর্যায়) (২য় সংশোধিত) এর আওতায় মনু নদীতে ১৫ কোটি ১৬ লক্ষ ৬৬ হাজার, ধলাই নদীতে ৩ কোটি ৯ লক্ষ ৩২ হাজার, ফানাই নদীতে ১১ কোটি ৯৫ লক্ষ ৩৪ হাজার ও জুড়ী নদীতে ৩ কোটি ৭৬ হাজার টাকা এবং ওই নদীর হাওর এলাকায় আগাম বন্যা প্রতিরোধ ও নিষ্কাশন উন্নয়ন প্রকল্পে ১২ কোটি ৩০ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই সমস্ত নদীতে বিভিন্ন প্রকল্প তৈরী করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান নামকাওয়াস্তে কাজ করে বিল তুলে নেন। এতে লাভবান হয়েছেন পাউবোর কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সরকারের বরাদ্দকৃত এই অর্থ মৌলভীবাজার জেলাবাসির কোন কাজে আসেনি। এদিকে মনু নদীতে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প চলমান থাকার পরেও একাধিক জায়গায় ইমার্জেন্সি প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। সচেতন মহল বলছেন, কার্যাদেশ অনুযায়ী মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বন্যা থেকে রক্ষা পেতে জেলার কয়েক লক্ষ মানুষ। জেলার নদী গুলোতে সঠিকভাবে কাজ না হওয়া প্রতি বছরই পড়তে হয় বন্যার কবলে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হন জেলাবাসী। একবারের বন্যায় ঘুরে দাঁড়ানোর পূর্বেই ফের দুর্ভোগে পড়তে হয় তাদের। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: জাবেদ ইকবাল বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ও বরাদ্দের বাইরে কাজ করার সুযোগ নেই। প্রতি বছর বন্যা হয় তাই স্থায়ী ভাবে কাজ করারও সুযোগ হয় না। তবে পরিকল্পিতভাবে স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাধ তৈরি করার জন্য আমরা প্রস্তাব দিয়েছি।

সর্বশেষ খবর