শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

জলাবদ্ধ ১৫০০ বিঘা জমি

দিনাজপুর প্রতিনিধি

জলাবদ্ধ ১৫০০ বিঘা জমি

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ থাকায় দীর্ঘদিন ১৫০০ বিঘা জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে আছে। এতে ইরি- বোরো ও আমন মৌসুমে চাষাবাদ করতে পারছে না ১০টি গ্রামের শত শত কৃষক। স্থানীয়রা বলছেন, পানি নিষ্কাশনের পথ রোধ করে অপরিকল্পিত পুকুর খনন করায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এতে এসব কৃষক পড়েছেন চরম বিপাকে। বছরে তাদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকেরা এ সমস্যা নিরসনে বিভিন্ন সময় আন্দোলনও করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফসলি জমির জলাবদ্ধতা নিরসনে জাইকার (জাপান-আন্তর্জাতিক-উন্নয়ন-সংস্থা) অর্থায়নে প্রথম ধাপে ২০২০ সালে ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে দৌলতপুর ইউপির বারাইপাড়া এলাকায় ১৬৩ মিটার ক্যানেল নির্মাণ করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে ৪৩ মিটার ক্যানেল নির্মাণ করা হয় ১১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে। তবে ক্যানেলটি আবাদি জমির চেয়ে উঁচু হওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশনে তেমন কাজে আসছে না। কৃষকদের অভিযোগ, ক্যানেলটি দিয়ে অল্প পরিমাণ পানি নিষ্কাশন হয়। এতে বেশির ভাগ ফসলি জমি জলাবদ্ধ থাকে। ওইসব জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে রয়েছে।  সরেজমিনে দেখা যায়, ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর, মহেশপুর, গড়পিংলাই, বারাইপাড়া, গণিপুর, মহদিপুর, আড়াপাড়া, ঘোনাপাড়া, পলিপাড়াসহ ওই এলাকার দশটি গ্রামের ৫০০ একর জমি জলাবদ্ধতায় অনাবাদি পড়ে রয়েছে। ফসলি মাঠ কচুরি পানায় ভরা। ক্ষতিগ্রস্ত মোস্তাফিজার রহমান, আইয়ুব আলী, বাবু, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, জয়নাল আবেদিন, ইউনুস আলী, মনিরুল ইসলাম মতিসহ স্থানীয় কৃষকরা জানান, প্রতি মৌসুমে বিঘাপ্রতি ২০-২৫ মণ ধান উৎপাদন হতো এসব জমিতে। এলাকার ২ শতাধিক কৃষকের ১৫০০ বিঘা (৫০০ একর) জমিতে বছরে ৬০ হাজার মণ ধান উৎপাদন হতো। যার আনুমানিক মূল্য সাড়ে ৭ কোটি টাকা। প্রায় ২০ বছর ধরে এসব জমি তারা চাষ করতে পারছেন না। কিছু জায়গায় পানি কম থাকলেও সেখানে আমন মৌসুমে ধানের চারা রোপণ করলে নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে কেউ ঝুঁকি নিয়ে আবাদ করেন না। বর্ষাকালে পানি ওইসব ফসলি জমিতে জমে থাকায় অনাবাদি হয়ে পড়ে থাকে। এতে কৃষকেরা চরম বিপাকে পড়েছেন। ফুলবাড়ী ইউএনও মীর মো. আল কামাহ্ তমাল বলেন, সেখানে একটি পাকা ক্যানেল রয়েছে। সেটি এখন ভাঙা সম্ভব নয়। তাই সেখানে বিকল্প কিছু করতে হবে। ক্যানেলের সঙ্গে বড় পাইপ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর