সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন ২৪ জন

বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন ২৪ জন

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কয়েকজন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

চোখ, মুখ, পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি নিয়ে এখনো বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন ২৪ জন। এদের মধ্যে অনেকে ঠিকমতো হাঁটতে পারছেন না। কারও কারও চোখে গুলি লাগায় দেখতে পারছেন না ঠিকভাবে। তাদের দাবি, আন্দোলনের সময় তারা সক্রিয় ভূমিকা রাখলেও আর্থিকভাবে তেমন সহযোগিতা পাচ্ছেন না। তারা সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (শজিমেক) সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ৪ শতাধিক আহত হয়ে এখানে ভর্তি হন। এদের মধ্যে অনেকে সুস্থ হয়েছেন। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। বর্তমানে শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৪ জন। আন্দোলনে বগুড়ায় শহীদ হয়েছেন সাতজন। আহতদের মধ্যে সবার শরীর থেকে এখনো গুলি অপসারণ করা যায়নি।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বগুড়া শহরের নারুলী এলাকার শামীম আহম্মেদ (৩৮) জানান, তিনি ৪ আগস্ট সরকার পতনের আন্দোলনে এসে সদর থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন। এরপর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার দুই পায়ে অসংখ্য গুলি লেগেছে। তিনি এখন লাঠিতে ভর করে হাঁটেন। মাঝে মাঝে পা অবশ হয়ে যায়। ব্যথায় ঠিক করে ঘুমাতে পারেন না। তিনি আরও জানান, তার উপার্জনে সংসার চলত। উপার্জন বন্ধ হওয়ায় পরিবার অর্ধাহারে-অনাহারে দিন পার করছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি দ্রুত সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই। এখন পর্যন্ত কোনো আর্থিক সহযোগিতা পাইনি। আন্দোলনে গিয়ে আহত হলাম। অথচ আমাদের খবর কেউ নেয় না।

আহত কাহালু উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের হেলালুর রহমান (৩০) জানান, ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গিয়ে বেলা ১২টার দিকে দুপচাঁচিয়া থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এরপর থেকে শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে গত শনিবার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো অনুদান পাননি। তবে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন ৩ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। তার সুস্থ হতে আরও টাকার প্রয়োজন। তিনি বলেন, আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সেটিও এক দিন পাওয়া যাবে। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ জানান, এই হাসপাতালে ২৪ জন ভর্তি আছেন। তারা সবাই গুলিবিদ্ধ। তাদের সার্বক্ষণিক সেবা দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর