শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

এক্স-রে ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বহু বছর ধরেই নষ্ট

সারিয়াকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিজেই রোগার্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

এক্স-রে ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বহু বছর ধরেই নষ্ট

দুর্নীতি-অনিয়মে কাতর সারিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন নিজেই রোগার্ত। ৫০ শয্যার এই হাসপাতালটির এক্স-রে ও অন্য সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি বহু বছর ধরে নষ্ট; তাই যন্ত্র বসানো ঘরগুলো তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। সেবার ঘাটতি, অপারেশন থিয়েটার শুরু থেকেই তালাবদ্ধ, রোগীদের নিম্নমানের খাবার পরিবেশন, একজনের পরিবর্তে অপরজনের ভাড়া ডিউটিসহ হাতপাতালের নোংরা পরিবেশ হাসপাতালটির নিত্যসঙ্গী। হাসপাতালের কোয়ার্টারে থাকেন না চিকিৎসকরা। এতে করে সেবার মান ভেঙে পড়েছে। জানা যায়, এ হাসপাতালে চিকিৎসক ১৩ জন। তাদের মধ্যে মাত্র পাঁচজন হাসপাতালের কোয়ার্টারে থাকেন। অন্যরা বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলা থেকে এ হাসপাতালে যাতায়াত করেন। জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা নিতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন রোগীরা। একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ- জরুরি বিভাগ থেকে গুরুতর অবস্থা না হলেও বগুড়ায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় রোগীদের। বহির্বিভাগে রোগীরা সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সেবা পান। ১২টার পর থেকেই হাসপাতালে সুনসান নীরবতা। এ হাসপাতালে প্রতিদিন মাত্র দুটি গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক সরবরাহ করা হয়- সিপ্রোফ্লক্সাসিন এবং অ্যামোক্সিসিলিন। বিভিন্ন ধরনের টেস্ট রোগীদের প্রায় এক যুগ আগে থেকেই বাইরের ডায়াগনস্টিক থেকে করতে হয়। প্যাথোলজিক্যাল পরীক্ষাগুলোও বাইরে করতে হয়। অথচ অপারেশন থিয়েটারসহ কয়েক কোটি টাকার যন্ত্রপাতি তালাবদ্ধ রয়েছে। রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগ রোগীর ব্যবস্থাপত্রে অ্যাজিথ্রোমাইসিন নামক অ্যান্টিবায়োটিক লিখে দেওয়া হয়। কিন্তু তা হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হয় না। প্রতি ট্যাবলেটের মূল্য ৩৫ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকা। এ ছাড়া হাসপাতালের পরিবেশ নোংরা। এ হাসপাতালের রোগীদের থাকার কামরার বেশকিছু ফ্যান এবং লাইট নষ্ট। দুস্থ এবং যাদের অন্যত্র চিকিৎসা নেওয়ার সামর্থ্য নেই, তারাই শুধুমাত্র বাধ্য হয়েই এ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তবে হাসপাতালে ভর্তি হয়েও ক্যানোলা, বেশকিছু স্যালাইন এবং প্রয়োজনীয় বেশির ভাগ দামি ওষুধ বাইরের ডিসপেনসারি থেকে কিনতে হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের রুমে ঢুকতেই চোখে পড়ে বেডের নোংরা পরিবেশ। সেখানকার পরিবেশ এবং দুর্গন্ধে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়বেন। এই হাসপাতালে রোগীরা তাদের কাক্সিক্ষত ওষুধ দীর্ঘ মাস ধরে পাচ্ছেন না। হাসপাতালটিতে ডায়াবেটিস, প্রেসার এবং হার্টের ওষুধ গরিব-অসহায় রোগীরা বাইরের দোকান থেকে কিনছেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাহবুব হোসেন সরদার জানান, সমস্যাগুলো খতিয়ে দেখে প্রতিকার করা হবে।

সর্বশেষ খবর