শিরোনাম
রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা
পটুয়াখালী

মহাসড়কে খানাখন্দ কাদাপানিতে একাকার

♦ দুর্ভোগে পর্যটকসহ এলাকাবাসী ♦ সাড়ে ১১ কিলোমিটারে বড় বড় গর্ত যার নেতিবাচক প্রভাব পুরো সড়কের ওপর

সঞ্জয় দাস লিটু, পটুয়াখালী

মহাসড়কে খানাখন্দ কাদাপানিতে একাকার

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা-বরিশাল মহাসড়কে খানাখন্দ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা-বরিশাল মহাসড়কের কলাপাড়া উপজেলার পাখিমারা বাজার থেকে লতাচাপলী ইউনিয়নের আলীপুর শেখ রাসেল সেতুর দক্ষিণপ্রান্তে ত্রিমুখী (তিন রাস্তার) মোড় পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটারে ইট-বালু-খোয়া উঠে খানাখন্দ, বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়ক কাদাপানিতে একাকার হয়ে গেছে। এতে সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে আসা লাখো পর্যটক ও এলাকাবাসী প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। খানাখন্দে ভরা এ সড়কের শুধু এই অংশের জন্যই নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পুরো সড়কের ওপর। বিশেষ করে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে দক্ষিণ জনপদে আসতে উন্নত সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে ওঠায় পর্যটকরা এখন কুয়াকাটামুখী হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের বেশির ভাগ স্থানের পিচ ঢালাই ওঠে গেছে অনেক আগেই। বেরিয়ে গেছে ইট-বালু-খোয়া আর চলতি বর্ষা মৌসুমে কাদা মাটি ওঠে পানিতে মিশে একাকার হয়ে আছে। কর্দমাক্ত পানিতে কোথাও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় বহু দুর্ঘটনা। পটুয়াখালী সওজ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মামলা সক্রান্ত জটিলতায় দীর্ঘ এক যুগেও সম্পন্ন হয়নি পটুয়াখালী-কুয়াকাটা-বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশের কাজ। কুয়াকাটা পর্যটন এলাকায় যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ার কারণে সওজ কর্তৃপক্ষ এ অংশে দায়সারাভাবে জরুরি মেরামত কাজ করে থাকে। পর্যটকরা জানান, বরিশাল হয়ে পটুয়াখালী শহর থেকে ভালোই আসছিলাম। কিন্তু শেষ পথটুকু বিপজ্জনক। কুয়াকাটার কাছাকাছি এসে এমন ভোগান্তি পর্যটকদের নিরুৎসাহী করবে। মুখ ফিরিয়ে নেবেন পর্যটকরা।

এলাকাবাসী ও পাখিমারা বাজারের ব্যবসায়ী ও বাসচালকরা জানান, সড়কের বেশির ভাগ স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্থান দেবে গেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই কাদাপানিতে একাকার হয়ে যাচ্ছে পুরো সড়ক। বাজারের ক্রেতারা আসা যাওয়ায় বেশ ভোগান্তিতে পড়ে। এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে বিকল হচ্ছে যানবাহন। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ইটের খোয়া ফেলে গর্ত ভরাট করলেও কয়েকদিন যেতে না যেতেই আগের চেয়ে এখন আরও খারাপ অবস্থা হয়েছে। মহিপুর মৎস্য বন্দরের ব্যবসায়ী মজনু গাজী বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম মাছের মোকাম মহিপুর, আলীপুর ও কুয়াকাটা। মৌসুমের সময় প্রতিদিন এখান থেকে লাখ লাখ টাকার ইলিশসহ নানা ধরনের মাছ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করা হয়। কোনো কোনো সময় মাছবোঝাই ট্রাক, পিকআপ বা লরির চাকা গর্তে আটকে যায়। এতে সময় বেশি ব্যয়ের সঙ্গে খরচ বাড়ছে।

ট্যুর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা এর সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, কুয়াকাটায় প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটক আসে। চলতি বর্ষা মৌসুমে সড়ক কাদাপানিতে একাকার হয়ে গেছে। পর্যটকরা বেশ ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন। এতে ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। কুয়াকাটার বদনাম হচ্ছে। কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, সড়ক যোগাযোগের দুরবস্থার কারণে পর্যটক নেই বললেই চলে। কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ওপর শুধু আলোচনাই না, চাপ অব্যাহত রেখেছি। হাজীপুর থেকে বেশ কিছু মেরামত কাজ হয়েছে। আবার বেশ কয়েকদিনের বর্ষায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা শেষ হলে কাজটা যেন তরান্বিত হয় সেজন্য আমাদের চাপ অব্যাহত রেখেছি। পটুয়াখালী সড়ক জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জামিল আক্তার লিমন বলেন, আদালতের আদেশে ওই মহাসড়কে বড় ধরনের সংস্কার কাজ করা যায়নি। উচ্চ আদালত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছেন। সড়কের নির্মাণকাজে আর কোনো বাধা নেই। বৃষ্টি কমলেই রাস্তার কাজ শুরু করা হবে।

 

সর্বশেষ খবর