মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০০ টা

পড়ে আছে ১৪৫ কোটির ফেরিঘাট

♦ নাব্য সংকটে বন্ধ চলাচল ♦ ভোগান্তিতে লাখ লাখ মানুষ

সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা

পড়ে আছে ১৪৫ কোটির ফেরিঘাট

উত্তরের আট জেলার মানুষের যোগাযোগ সহজ করতে ২০১৭ সালে শুরু হয় ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে গাইবান্ধার বালাশী ও জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ফেরিঘাট টার্মিনাল নির্মাণকাজ। দুই দফায় সময় বাড়িয়ে ১৪৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় বালাসী-বাহাদুরাবাদ ঘাটের দুই প্রান্তে দুটি টার্মিনাল। ২০২১ সালের জুনে এ কাজ শেষ হয়। এদিকে দীর্ঘ ২২ বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালের ৯ মার্চ গাইবান্ধার বালাসী থেকে জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাট নৌপথে পরীক্ষামূলকভাবে লঞ্চ সার্ভিস চালু করে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ। ফেরি সার্ভিসের পরিবর্তে লঞ্চ সার্ভিস উদ্বোধনের কয়েকদিন পরই যমুনা-ব্রহ্মপুত্রে নাব্যসংকটে তা বন্ধ হয়ে যায়। টার্মিনালে নয়নাভিরাম অবকাঠামো এখন জনমানবহীন প্রান্তর হয়ে আছে। এখানে গড়ে তোলা হয় পাইলট হাউস, মসজিদ, অফিস কক্ষ, টোল আদায় কক্ষ, যাত্রীদের বিশ্রামাগার, ক্যান্টিন ও আনসার ব্যারাকসহ বেশকিছু নান্দনিক স্থাপনা। কিন্তু কোনো কাজে আসেনি প্রায় দেড় শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা ফেরিঘাট টার্মিনাল। বালাসী-বাহাদুরাবাদ ২৬ কিলোমিটার দূরত্বের নৌপথ সচল করতে একাধিকবার নদী খননের নামে মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করা হয়েছে। তার পরও এ রুট ফেরি চলাচলের উপযোগী হয়নি।

ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ১৯৩৮ সালে ব্রিটিশ সরকার চালু করেছিল এ রেলওয়ে ফেরি। ১৯৯০ সালে নাব্যসংকটের অজুহাতে তিস্তামুখ ঘাটটি স্থানান্তর করা হয় একই উপজেলার উজানে বালাসী ঘাটে। সেখানে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ত্রিমোহিনী থেকে বালাসী ঘাট নতুন ৬ কিলোমিটার রেলপথ। পরে বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের পরও কিছুদিন চালু ছিল মালবাহী ওয়াগন ফেরি। পরবর্তীতে ২০০০ সালে নাব্যসংকটে সেটিও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এর পর নতুন করে ফেরিঘাট টার্মিনাল নির্মাণ ও ফেরি চালুর উদ্যোগ উত্তরের লাখো মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার করলেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় যমুনা-ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যসংকট। গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের সংগঠক মনজুর আলম মিঠু বলেন, এখানে কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী ছাড়া বিআইডব্লিউটিএর কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই। উদ্বোধনের দুই বছর পরও মূল ফটকসহ টার্মিনালের ভবনগুলো সবই তালাবদ্ধ। ফুলছড়ি ইউএনও জগদ্বন্ধু ম ল বলেন, বিআইডব্লিউটিএ নদীর উৎসমুখ খননে সন্যাসীর চরে কিছু কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি বালাসী-বাহাদুরাবাদ নৌপথ পরিদর্শন করেছেন বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা। বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহম্মেদ মোস্তফা মুঠোফোনে জানান, নাব্যসংকটে রুটটি সচল করা যাচ্ছে না। এটি সচল করতে বিআইডব্লিউটিএ নদী খননের পরিকল্পনা করছে। যতদ্রুত সম্ভব বিআইডব্লিউটিএ এই রুটে ফেরি চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর