সংস্কারের অভাবে বরগুনা জেলায় ২৫৪টি লোহার সেতু চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে পুরোপুরি ভেঙে গেছে ১৮টি। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এসব ভাঙা ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে প্রতিদিন পার হতে হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ ও যানবাহনকে। এসব সেতুতে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। চলতি বছরের জুন মাসে আমতলীতে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ভেঙে মাইক্রোবাস খালে পড়ে নিহত হয় নয়জন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভাঙা ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার না করলে আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনা-প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে হালকা যান চলাচল (কম খরচে) প্রকল্পের অধীনে এসব সেতু নির্মাণ করা হয়। বরগুনা সদর উপজেলায় ৭০, বেতাগীতে ১৬, বামনায় ২৫, তালতলীতে ২৯, আমতলীতে ৯৮ এবং পাথরঘাটায় ১৬টি লোহার সেতু পারাপারের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার এবং পরে কোনো তদারকি বা রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় এসব সেতু ঝুঁকিপূর্ণ ও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় ঝড়-বন্যায় অধিকাংশ সেথূ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেতুগুলোর সিমেন্টের পাটাতন, হাতল, এঙ্গেল ভেঙে পড়ে আছে। কোনো কোনো স্থানে সেতুর বিভিন্ন লোহার অংশ চুরি হয়ে গেছে। আমতলীর মহিষডাঙ্গা গ্রামে চাওড়া খালে ২০০৬ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ১ কোটি টাকা ব্যয়ে আয়রন সেতু নির্মাণ করে। তিন বছরের মাথায় ২০০৯ ওই সেতুর মাঝখান দেবে যায়। ২০২১ সালের জুন মাসে ব্রিজের মাঝখানে ভেঙে পড়ে। এলজিইডির আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমতলীতে ৯৮টি আয়রণ সেতু চলাচলের অনুপযোগী। তালিকা করে আমরা জেলা অফিসে পাঠিয়েছি। ব্রিজগুলো প্রতিস্থাপনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদি হাসান খান বলেন, বরাদ্দ না থাকায় মেরামত অথবা সংস্কার করতে পারিনি। ব্যবহারের অনুপযোগী ও ধসে পড়া সেতুর তালিকা তৈরি করে প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশনা পেলেই আমরা কাজ শুরু করব।