মাত্রাতিরিক্ত বিলের অভিযোগ করেছেন জয়পুরহাটের বিদ্যুৎগ্রাহকরা। ভূতুড়ে বিলের বোঝায় তারা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। গ্রাহকদের অভিযোগ অনেক মিটার রিডার না দেখেই বিদ্যুৎ বিল (পিচরেট) করেন। এ কারণে মিটার রিডিংয়ের সঙ্গে মিল থাকে না বিদ্যুৎ বিলের। বিল সংশোধন করতে গেলেও পড়তে হয় নানা ভোগান্তিতে। এর শিকার হচ্ছে জয়পুরহাটের নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) প্রায় ৩৩ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক। তবে কর্তৃপক্ষ বলছেন গ্রাহকদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সঠিকভাবে পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অনুসন্ধানেও এর সত্যতা মেলে। পৌর এলাকার চিত্রাপাড়া মহল্লার আবদুল আলীম নামে এক গ্রাহক জানান, তার বিদ্যুৎ মিটারে দেখা যায় ৭ হাজার ৫১৪ ইউনিট। সেখানে বিলে রয়েছে ৬ হাজার ৮৭০ ইউনিট। পার্থক্য প্রায় ৬৪৪ ইউনিট। বিশ্বাসপাড়া মহল্লার আলাউদ্দিনের বিদ্যুৎ মিটারে ১৫৫২ ইউনিট বিলে রয়েছে ১১১০ ইউনিট। পার্থক্য প্রায় ৪৪২ ইউনিট। শান্তি নগর মহল্লার সকিনা বিবির ২২০০ ইউনিট বিলে রয়েছে। মিটারে দেখা যায় ২৭১০। পার্থক্য প্রায় ৫১০। এভাবেই হাজার হাজার মিটারের ইউনিট মিল না করে বিল করেছেন (পিচরেট) মিটার রিডাররা। কেউ কেউ কয়েক বছর ধরে ভূতুড়ে বিলের বোঝা টেনে বেড়াচ্ছেন। গড় ৭ টাকা ২০ পয়সা (৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট) রেটে বিদ্যুৎ খরচ করা হলেও মিটার রিডারের কারসাজিতে পরবর্তী সময়ে মিটারে বেশি ইউনিট থাকায় গুনতে হয় ১৪ টাকা ৬১ পয়সা। ৬০০ ইউনিটের ঊর্ধ্বে গেলে অতিরিক্ত বিল দিতে হয় গ্রাহকদের। প্রতি মাসে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা ভূতুড়ে বিল পরিশোধ করতে হয়। জয়পুরহাট পৌর শহরের শান্তিনগর মহল্লার শামীম ইশতিয়াক জেম বলেন, বিদ্যুৎ বিল নিয়ে নেসকো আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। প্রতিমাসেই বিদ্যুৎ বিল এলে দেখি মিটারের রিডিং আর বিলের রিডিং এক থাকে না। এই পার্থক্যটা দিন দিন বাড়তে থাকে। নেসকো অফিসের যারা এই প্রতারণার ফাঁদ পেতেছেন তারা মোটামুটি সর্বোচ্চ রেটে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত ইউনিট জমিয়ে রেখে একবারে বড় অঙ্কের বিল প্রস্তুত করে। যা আমাদের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। আরাফাত নগর মহল্লার বিল্লাল হোসেন বলেন, ওরা আমার মিটারের রিডিং না দেখে বিল করেছে ১৫ হাজার ৬৩৮ টাকা। মিটার রিডার রনি হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা গ্রাহকদের বাড়িতে গিয়ে নিয়মিত মিটার দেখেই সময়মতো বিল করি। কিছু বিষয় আছে, মিটার দেখতে বা উঁচুতে থাকার কারণে ভুল হতে পারে। গ্রাহকদের নির্দিষ্ট অভিযোগের কথা বলা হলেও তিনি এড়িয়ে গতানুগতিক অভিযোগ অস্বীকার করেন। জয়পুরহাট নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সূত্রধর বলেন, আমাদের ৩৩ হাজার গ্রাহক। আমাদের মিটার রিডারদের স্পষ্টভাবে বলা আছে শতভাগ মিটার রিডিং নিয়ে বিল তৈরি করতে। তারা সাধারণত ওইভাবে করে থাকে। গ্রাহকের কোনো অভিযোগ থাকলে অফিসে এলেই বিল ঠিক করে দেওয়ার কথা বললেন এই কর্মকর্তা।